খালেদার বক্তব্য দায়িত্বহীন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কোনো দেশ বর্তমান সরকারকে ‘স্বীকৃতি’ দেয়নি বলে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী বলেছেন, দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বলছেন তিনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2014, 09:42 AM
Updated : 24 Oct 2014, 12:32 PM

সম্প্রতি দুটি আন্তর্জাতিক সংসদীয় ফোরামের শীর্ষ পদে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের বিজয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, “স্বীকৃতি না পেলে আমরা এসব বৈশ্বিক নির্বাচনে কিভাবে জিতলাম?”

“এগুলো বালখিল্যতা, দায়িত্বহীন কথাবার্তা,” বিএনপি চেয়ারপারসনকে ইঙ্গিত করে বলেন তিনি।

৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যায়িত করে বৃহস্পতিবার নীলফামারিতে এক জনসভায় খালেদা জিয়া বলেন,  “বিশ্বের কোনো  দেশ এই অবৈধ সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। শুধু ফটোসেশন, ছবি তুললে মনে করবেন না স্বীকৃতি পাওয়া যাবে। গণতন্ত্র না থাকলে কোনো দেশ কাউকে স্বীকৃতি দেয় না।”

সম্প্রতি কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন সাবের হোসেন চৌধুরী। দুটি ক্ষেত্রেই ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা।

শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রী মাহমুদ আলী।

তবে  বৃহস্পতিবার নীলফামারীতে খালেদা জিয়ার একটি মন্তব্য নিয়েই তার আগ্রহ ছিল বেশি। ওই সমাবেশে সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে বিএনপি প্রধান বলেন, কোনো দেশ তাদের স্বীকৃতি দেয়নি।

সাম্প্রতিক ইতালি সফর নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলন চলাকালে খালেদা জিয়া ওই মন্তব্য করেন।

অনেক সংবাদপত্র এই দুজনের বিষয়ের সংবাদ একই পৃষ্ঠায় পাশাপাশি ছাপায় তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বিশেষ কোনো নাম উল্লেখ না করে তিনি একটি পত্রিকার কথা বলেন, যেখানে দুটি সংবাদ পাশাপাশি ছাপা হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশ্ন, “এটা কীভাবে হয়। তিনিতো এখন আর সংসদে নেই। ”

আওয়ামী লীগকে দ্বিতীয় বারের মতো ক্ষমতায় আনা ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে বয়কট করেছে বিএনপি।   

সর্বশেষ পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনার মধ্যেই তুমুল প্রতিযোগিতার পর জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ।

এর আগে সিপিএ ও আইপিইউর প্রধান হিসেবে স্পিকার শিরীন ও সাংসদ সাবের নির্বাচিত হন। এছাড়াও মরক্কোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২০১৬ সালে অভিবাসন ও উন্নয়ন বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজক হিসেবে জয়ী হয়েছে বাংলাদেশ।

আগের দিন সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অষ্টম বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই সব বিজয় সহজে আসেনি।

শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ওই সব নির্বাচনে সব দেশ সরাসরি ও গোপন ব্যালটে বাংলাদেশের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেন।”

“তারা আমাদের স্বীকৃতি না দিয়ে ভোট দিল কীভাবে,” প্রশ্ন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।

তিনি বলেন, “মনে হচ্ছে (খালেদা জিয়া) কোনো তথ্য রাখেন না।”

তবে প্রধানমন্ত্রী ও খালেদা জিয়ার সংবাদ সমান গুরুত্ব দিয়ে ছাপার আবারো সমালোচনা করে মন্তব্য করেন, “এবিষয়ে আমার চরম আপত্তি আছে।”

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ২৮ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত দুবাইতে বিশ্ব ইসলামী অর্থনৈতিক ফোরামের দশম বৈঠকে অংশ নেবেন।

তার আগে উপসাগরীয় এই দেশটির প্রধান শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের আমন্ত্রণে ২৫ থেকে ২৭ অক্টোবর সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয়কে সঙ্গ দেবেন। আর তিনি নিজে ২৯ থেকে ৩০ অক্টোবর দুবাইতে অনুষ্ঠেয় পাইরেসি প্রতিরোধ বিষয়ক এক সম্মেলনে অংশ নেবেন।