‘নিজামী-সাঈদীকে চাওয়ার যৌক্তিকতা নেই’

যুদ্ধাপরাধীদের ‘গুরু’ গোলাম আযমের জানাজায় ইমামতির জন্য কারাবন্দি মতিউর রহমান নিজামী বা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্যারোলে মুক্তি চাওয়ার কোনো ‘যৌক্তিকতা’ নেই বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2014, 08:33 AM
Updated : 24 Oct 2014, 10:44 AM

তবে এ বিষয়ে আবেদন করা হলে আদালত ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দেবে বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির এই সদস্য।

সমসাময়িক বিষয় নিয়ে শুক্রবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

মৃত্যুর আগে গোলাম আযম যুদ্ধাপরাধের মামলায় বিচারাধীন নিজামী বা দণ্ডিত সাঈদীর ইমামতিতে তার জানাজার নামাজ পড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করে গেছেন বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

সকালে গোলাম আযমের আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেছেন, “তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবার যদি সিদ্ধান্ত নিতে চায় তবে আইনজীবীরা সরকারের কাছে আবেদন জানাবেন।”

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে নাসিম বলেন, “অতীতেও কারাবন্দি অবস্থায় অনেকে মারা গেছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বলতে চাই- জানাজায় ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন থাকার অনুমতি পায় বা প্যারোলে অনুমতি পায়। তারা তো সে রকম কেউ না।

“তাই এ দাবির কোনো যৌক্তিকতা নেই। বিষয়টি আদালত ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখবে।”

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ৯০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত গোলাম আযম বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।  ৯২ বছর বয়সী এই জামায়াত নেতার আরও ৮৯ বছর কারাভোগ বাকি ছিল।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযম একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধীদের নেতৃত্ব দেন। তার মতো দলের বর্তমান নায়েবে আমির সাঈদীও যুদ্ধাপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত। দলটির আমির নিজামীর যুদ্ধাপরাধের বিচার চলছে।

এদিকে গোলাম আযমের জানাজায় নিজামী বা সাঈদীকে চাওয়ার বিরোধিতা করে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, “যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিতদের দিয়ে জানাজা করার ইচ্ছা জানিয়ে গোলাম আযম মৃত্যুর সময়ও রাজনীতি করে গেছেন।

“মানুষ সাধারণত মৃত্যুর আগে কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে যান। কিন্তু গোলাম আযম যুদ্ধাপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এবং বিচারাধীন ব্যক্তিদের দিয়ে জানাজা পড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে তার আইনজীবী জানালেন।”

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে গোলাম আযমকে গত বছরের ১৫ জুলাই ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে বলা হয়, অপরাধ মৃত্যুদণ্ডসম হলেও বয়স বিবেচনায় তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।