তথ্য অধিকার আইনের ধারা-৭ সংস্কারের দাবি

তথ্য অধিকার আইনের ধারা-৭ এর অপব্যবহার করে কর্মকর্তারা জনগণকে তথ্য পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে অভিযোগ করে তা সংশোধনের মত এসেছে এক আলোচনা সভায়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2014, 03:01 PM
Updated : 21 Oct 2014, 03:01 PM

মঙ্গলবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ওই আলোচনার সভায় এই মত আসার পর তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু তা বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।

ধারা ৭ এর উপধারা ‘ত’ এ বলা আছে- কোনও বিষয়ে কাজ শেষ হওয়ার আগে কিংবা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক হবে না।

‘কতিপয় তথ্য প্রকাশ বা প্রদান বাধ্যতামূলক নয়’- শিরোনামের ওই ধারায় আরও ২০টি উপধারায় কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে, যা সংস্কারের দাবি তোলা হয় ওই আলোচনা সভায়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রতিনিধিরা অভিযোগ করেন, ধারা-৭ এর বিভিন্ন বিধিনিষেধকে ‘অজুহাত’ হিসেবে দেখিয়ে মাঠ পর্যায়ে তথ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে না।

ধারা-৭ এর ২০টি উপধারাকে আরও স্পষ্ট করা প্রয়োজন বলে অনুষ্ঠানে অভিমত জানান প্রধান তথ্য কমিশনার মোহাম্মদ ফারুকও।

তিনি বলেন, এবিষয়ে মানুষের মাঝে পর্যাপ্ত ধারণা না থাকার কারণে তারা সেবা নিতে পারছে না।

নানা অভিযোগ শোনার পর তথ্যমন্ত্রী ইনু এই ধারার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেন, তথ্য অধিকার আইনের সুযোগ নিয়ে নৈরাজ্যকারী, চক্রান্তকারী ও গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি যাতে অপতৎপরতা চালাতে না পারে সেজন্য ধারা-৭ সংযোজন করা হয়েছে।

“তবে ধারা-৭ এর সংস্কার নিয়ে কোনও প্রস্তাব এলে তা বিবেচনায় আনা হবে, এমনকি প্রয়োজনে সংস্কারও করা হবে,” বলেন তিনি।

‘বাস্তব’ প্রয়োজনে আইন সংশোধন করা গেলেও তার সুযোগ নিয়ে গণতন্ত্রবিরোধীরা যেন অপতৎপরতা চালাতে না পারে, সেদিকে দৃষ্টি রাখার ওপরও জোর দেন মন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর ২০০৯ সালে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ পাস করা হয়, যার বলে গঠিত হয় তথ্য কমিশন।  

আইন অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কাজ নিয়ে তথ্য চেয়ে সাড়া না পেলে কমিশনের কাছে অভিযোগ করা যায়।

প্রধান তথ্য কমিশনার ফারুক দাবি করেন, তথ্য সেবার ক্ষেত্রে কমিশন শতভাগ কার্যকর।

গত এক বছরে কমিশনে ৭২০টি মামলা এসেছিল, যার সবকটিরই সুরাহা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভস (এমআরডিআই) আয়োজিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানে মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিকরাও নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।

সাবেক তথ্য কমিশনার অধ্যাপক সাদেকা হালিম, মোহাম্মদ আবু তাহের, বর্তমান কমিশনার নেপাল চন্দ্র সরকার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।