আইনমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ

সদ্য প্রয়াত বিতর্কিত টিভি আলোচক পিয়াস করিমের ‘পক্ষ’ নেওয়ার অভিযোগ তুলে আইনমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে কয়েকটি সংগঠন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2014, 08:37 AM
Updated : 21 Oct 2014, 07:32 PM

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ওই বিক্ষোভে মন্ত্রী আনিসুল হকের কুশপুতুলও পোড়ান তারা।

পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা আনিসুল হককে ‘নব্যরাজাকার’ আখ্যায়িত করে বক্তব্য রাখেন। এসময় আনিসুল হকের পদত্যাগ চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতেও দেখা যায় তাদের।

ওই সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, কাজী আরেফ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ) ও কৃষক শ্রমিক পার্টি (কেএসপি)।

গত ১৩ অক্টোবর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পিয়াস করিম হৃদরোগে মারা যান। স্বজনদের পক্ষ থেকে তার লাশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের ‘পক্ষের লোক’ আখ্যায়িত করে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

এ পরিস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও তার লাশ শহীদ মিনারে রাখার অনুমতি দেওয়া থেকে বিরত থাকে।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে পিয়াস করিম ও তার বাবার একাত্তরের ভূমিকা তুলে ধরেন আইনমন্ত্রী। তিনি দাবি করেন, পিয়াস করিম একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচারপত্র বিলি করতে গিয়ে আটক হয়েছিলেন। আর তাকে ছাড়াতেই কুমিল্লায় শান্তি কমিটিতে যোগ দিতে ‘বাধ্য’ হন তার বাবা এম এ করিম।
মন্ত্রীর এমন বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন থেকেও প্রতিবাদ জানানো হয় বক্তব্যের।
মঙ্গলবার বিক্ষোভ সমাবেশে বিশ্ব বাঙালি সম্মেলনের সভাপতি মুহাম্মদ আবুল খালেক বলেন, “পিয়াস করিমের পক্ষ অবলম্বন করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক যে কথা বলেছেন, এ ধরনের কথা বলা ঘৃণ্য কাজ। তাই পিয়াস করিমকে নিয়ে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, এর জন্য তাকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।”
তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের ভেতরে লুকিয়ে অনেক রাজাকার মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাস নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন। তাই সরকারের উচিত এ সমস্ত রাজাকারদের দলীয় কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়ে শাস্তির আওতায় আনা।”
কৃষক শ্রমিক পার্টির সভাপতি সালাম মাহমুদ বলেন, “আইনমন্ত্রীর কাছে পিয়াস করিমের সত্য ইতিহাস থাকার পরও কেন আগে কোনও ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি, আমরা জানতে চাই? আইনমন্ত্রী নিজে পিয়াস করিমের ব্যাপারে সাফাই গেয়েছেন, যা স্বাধীনতাকামী মানুষের মুক্তিযুদ্ধের পবিত্র চেতনায় আঘাত করেছে।”

জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগের সভাপতি এম এ জলিলের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কাজী আরেফ ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মাসুদ আহমেদ, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক হাবিবুল্লাহ মিছবাহ, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের (বোয়াফ) সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়, জাসদ নেতা হুমায়ূন কবির প্রমুখ।