অস্ত্রমামলা: নিজাম হাজারীর ২ জামিনদারকে তলব

অস্ত্র মামলায় সাজা ভোগের সময় ২০০৬ সালে ফেনী সদরের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দুই জামিনদারকে তলব করেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2014, 12:41 PM
Updated : 20 Oct 2014, 12:41 PM

ওই জামিন চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া একটি রিট নিয়ে শুনানি চলাকালে সোমবার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও মো. আতাউর রহমান খানের দ্বৈতবেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আগামী ৫ নভেম্বর দুই জামিনদারকে হাইকোর্টে হাজির করতে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে চট্টগ্রাম কারাগারের কয়েদিদের তালিকা দাখিল করতে চট্টগ্রাম জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

আদেশে তৎকালীন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম মহিউদ্দিন চৌধুরীকেও আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।  এছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারকে নিজাম হাজারীর জামিন পাওয়া মামলার নথি দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। নিজাম হাজারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন।  আর রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি পরিচালনা করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান রুমি।

২০০৬ সালের ২৭ মে হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি এসকে সিনহা ও বিচারপতি জোবায়ের আহমেদ চৌধুরীর দেয়া জামিনে একই বছরের ১ জুন মুক্তি পান নিজাম হাজারী।

চাকু পাওয়ার একটি মামলায় দেয়া শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে তাকে ওই জামিন দেয়া হয় বলে আদেশে উল্লেখ রয়েছে।

এই জামিন চ্যালেঞ্জ করে ফেনী জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শওকত হোসেন ভুঁইয়ার করা একটি রিটের শুনানি চলছে হাইকোর্টে। ওই আবেদনে গত ৮ জুন একটি রুল দেয় হাই কোর্ট। পরে ১৬ জুলাই পরবর্তী শুনানিতে জামিনের ক্ষেত্রে সাংঘর্ষিক তথ্য পায় হাই কোর্ট।

ওই তথ্য নিয়ে শুনানির এক পর‌্যায়ে ১৯ সেপ্টেম্বর একই বেঞ্চ নিজাম হাজারীর আইনজীবী এম এ বাশার ও তৎকালীন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে ১৯ অক্টোবর আদালতে তলব করে।

আদালতে বাদী পক্ষের দেয়া তথ্যে দেখা যায়, চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ২০০০ সালের ১৬ আগস্ট একটি অস্ত্র মামলায় দুটি ধারায় ১০ বছর ও সাত বছরের কারাদণ্ড হয় নিজাম হাজারীর। সব মিলে এই সাংসদের ১০ বছর কারাভোগ করার কথা।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে নিজাম হাজারী আপিল করলে ২০০১ সালের ২ মে হাই কোর্ট তা খারিজ করে দেয়। ২০০২ সালের ২৭ এপ্রিল আপিল বিভাগেও তার আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এরপর পুনর্বিবেচনার আবেদনও না-মঞ্জুর হয়।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম কারাগারের একটি রেকর্ডের অনুলিপি যুক্ত করে দৈনিক প্রথম আলোর দাখিল করা একটি হলফনামায় দেখায় যায়, সাজা খাটার পর ২০০৫ সালের ১ ডিসেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পান নিজাম হাজারী।

এই পরিস্থিতিতে উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক হত্যাকাণ্ড নিয়ে আলোচনার মধ্যে রুল জারি করে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীর সংসদ সদস্যপদ নিয়ে প্রশ্ন তোলে হাই কোর্ট।

ফেনী সদর থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হওয়া নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, রায়ের আগে পরে মিলে ১০ বছর পূরণ হওয়ার আগেই ২০০৫ সালের ১ ডিসেম্বর তিনি কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন এবং সে তথ্য তিনি নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলফনামায় গোপন করেন।