চট্টগ্রামের রাস্তায় নতুন ট্যাক্সি ক্যাব

রাজধানীর রাস্তায় নামার সাত মাসের মধ্যে বন্দরনগরী চট্টগ্রামেও নামানো হলো নতুন ট্যাক্সি ক্যাব।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2014, 11:35 AM
Updated : 19 Oct 2014, 11:35 AM

রোববার প্রথম দফায় ৫০টি ট্যাক্সি ক্যাব নামিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস। বাকি গাড়িগুলো ডিসেম্বরের মধ্যে বন্দরনগরীর রাস্তায় নামবে।

সকালে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে ট্যাক্সি ক্যাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী, নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, সাংসদ নজরুল ইসলাম ও ওয়াসিকা আয়শা খান।

গত ২২ এপ্রিল রাজধানীর কুর্মিটোলায় আর্মি গলফ ক্লাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের ট্যাক্সিক্যাব উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সে সময় ট্রাস্টের ২৭টি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের ১৯টি ট্যাক্সিক্যাব রাস্তায় নামে। পর্যায়ক্রমে ঢাকা ও চট্টগ্রামে আরো ৬০০ গাড়ি নামানোর কথা রয়েছে দুই প্রতিষ্ঠানের।

চট্টগ্রামের রাস্তার জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও জিপিএস সুবিধা সম্বলিত এসব ট্যাক্সি ক্যাবের প্রথম দুই কিলোমিটারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ টাকা। পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ৩৪ টাকা ও অপেক্ষা চার্জ প্রতি মিনিটে চার টাকা ২৫ পয়সা।

মুঠোফোনের (০১৭৫৫৬৬৭১৭১) এই নম্বরে যোগাযোগ করে ক্যাব ভাড়া করা যাবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের মীরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত আরেকটি মেরিন ড্রাইভ সড়ক হবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত আরেকটি মেরিন ড্রাইভ করার পরিকল্পনা আছে।

অনতিবিলম্বে ফিজিবিলিটি স্টাডিতে যাব।”

বর্তমানে কক্সবাজার-টেকনাফে ৬৪ কিলোমিটারের মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের কাজ চলছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। 

চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ চলছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিশেষ অর্থনৈতিক জোন ও ট্যুরিস্ট ভিলেজ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

তিনি জানান, খাগড়াছড়িতে ২০ টি ও টেকনাফে ১৪টি সেতুর কাজ হচ্ছে। এসব কাজ শেষ হলে বান্দরবান-নীলগিরি-থানচি-আলীকদম হয়ে কক্সবাজার যাওয়া যাবে। কেরানীহাট বা চট্টগ্রাম শহরে এসে কক্সবাজার যেতে হবে না।”

চট্টগ্রামের যত্রতত্র বিলবোর্ড লাগানোর সমালোচনা করে কাদের বলেন, চট্টগ্রামে বিলবোর্ড ছত্রাকের মত বাড়ছে। কোনো সামঞ্জস্য নেই। বিলবোর্ডের জন্য নদী, আকাশ, সমুদ্র, বৃষ্টি কিছুই দেখা যায় না। কেন এ অবস্থা ?

এসময় সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীকে উদ্দেশ করে মন্ত্রী বলেন, “এখানে মহিউদ্দিন ভাই আছেন। আপনাদেরই উদ্যোগ নিতে হবে।”

মেয়র হিসেবে মহিউদ্দিনের মেয়াদকালের কথা স্মরণ করে বলেন, “মহিউদ্দিন চৌধুরী যখন মেয়র ছিলেন তখন শহরে প্রবেশ করলেই মনে হত ইউরোপের কোনো শহরে এসেছি। এখন কী অবস্থা! সব খানাখন্দে ভরা।

“এ শহরের রাস্তা আমার নয়। তবে প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব দিলে আমি দেখতে পারি। আমি এখানে কারও বিরুদ্ধে বলতে আসিনি। আসলে চট্টগ্রামকে প্রাচ্যের রানি হিসেবে দেখতে চাই।”

অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চ থেকে নেমে কুশল বিনিময়ের সময় সিডিএ চেয়ারম্যানের কাছে বিলবোর্ড ও সড়ক বিষয়ে কী করা যায়, তা জানতে চান মন্ত্রী।

এসময় মহিউদ্দিনের পেছনে দাঁড়ানো সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম নিরব ছিলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, “মহিউদ্দিন ভাই আছেন। উনিই পারবেন।”

চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ইবিআরসি কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও চট্টগ্রাম এরিয়ার কমান্ডার মেজর জেনারেল সাব্বির আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) এ কে এম মুজাহিদ উদ্দিন।