এজন্য প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করা হতে পারে বলেও আভাস দিয়েছেন তিনি।
যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির দণ্ড মওকুফের সুযোগ না রাখা, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রিভিউ আবেদন এবং দল হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর বিচারের দাবিতে রোববার আইনমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।
দায়িত্বপ্রাপ্ত আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মোহাম্মদ জহিরুল হক ও আইনমন্ত্রীর একান্ত সচিব মাসুদ করীম সচিবালয়ের ফটক থেকে স্মারকলিপি এনে মন্ত্রীর কাছে দেন।
স্মারকলিপি দেখিয়ে মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ভবিষ্যতে মানবতাবিরোধী অপরাধীকে মাফ করে দেবেন- এটা ভাবতেও গা শিউরে ওঠে।
“কিন্তু আমরা দেখেছি মুজাহিদ-নিজামী বাংলাদেশের মন্ত্রী হয়েছিলেন। ভবিষ্যতের জন্য কিছু একটা চিন্তা করতে হবে (মানবতাবিরোধীদের ক্ষমায়), এটা আমি মনে করি।”
যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিধান রহিতে সরকারের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে কোনও রাষ্ট্রপতি যদি মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ক্ষমা করার সাহস দেখান তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া... এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে যে বিচার করা হচ্ছে সব নষ্ট হয়ে যাবে।
“আমার কথা হচ্ছে এই যে প্রক্রিয়া (যুদ্ধাপরাধীদের বিচার) এটা নিয়ে কোনও আপস নেই। ১৯৭১ সালে যে নৃশংসতা হয়েছিল, যারা এটা করেছেন তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতেই হবে। মানবতাবিরোধী অপরাধীরা যাতে কোনও ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে বেরিয়ে না যেতে পারে, তাও নিশ্চিত করতে হবে।
“নিশ্চয়ই আমি আপনাদের (সাংবাদিক) এটুকু বলতে পারি যে, নীতি নির্ধারক সর্বোচ্চ মহলে আমি এই কথাগুলো তুলব এবং এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের জন্য আমি চেষ্টা করব।”
‘পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে রিভিউ’
জামায়াতের নায়েবে আমির সাঈদীর আপিলের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর রায় পর্যালোচনার (রিভিউ) আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হলেও আপিলে সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
যুদ্ধাপরাধের জন্য দল হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর বিচারের জন্য আইন সংশোধন হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আগামী ৩ নভেম্বরের মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনটি সংশোধনীর জন্য উঠতে পারে।
“আগামীকালের মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনটি যাচ্ছে না। ২৭ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে না। আগামী ৩ নভেম্বরের মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনটি সংশোধনীর জন্য উঠতে পারে।”
তবে দল হিসাবে জামায়াতের বিচার করতে আন্তর্জাতিক ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্টে কী সংশোধনী হচ্ছে সে বিষয়ে কিছু বলেননি মন্ত্রী।
“মন্ত্রিপরিষদ সভায় উঠার আগে আমি এ নিয়ে কিছু বলতে পারি না,” বলেন তিনি।
তবে ওই সংশোধনী পাস হলে দল হিসাবে জামায়াতের বিচার করা যাবে বলে মনে করছেন আনিসুল হক।