ইতিহাসবিদ সালাহ্উদ্দীন আর নেই

জাতীয় অধ্যাপক সালাহ্উদ্দীন আহমদ মারা গেছেন, যিনি ইতিহাস চর্চায় বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক এবং স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার লাভ করেছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2014, 04:25 AM
Updated : 20 Oct 2014, 03:57 AM

রোববার ভোর ৬টার দিকে বনানীতে নিজের বাসায় তার মৃত্যু হয় বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। 

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। 

এই ইতিহাসবিদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শোকবাণীতে তিনি বলেছেন, প্রফেসর সালাহ্উদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে বাংলাদেশে ইতিহাস চর্চায় যে শূন্যতার সৃষ্টি হল তা পূরণ হওয়ার নয়।

সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সালাহ্উদ্দীন আহমদের মরদেহ বেলা আড়াইটা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। পরে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে। বাদ আসর জানাজা শেষে বনানী গোরস্তানে তাকে শায়িত করা হয়।

১৯২৪ সালে ২৪শে সেপ্টেম্বর ফরিদপুর শহরে জন্ম সালাহ্উদ্দীনের। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে বিএ অনার্স এবং এমএ করেছিলেন তিনি। পরে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসেলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এ এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

শিক্ষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৪৮ সালে জগন্নাথ কলেজে। ১৯৫৬ সালে তিনি জাপান বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক জাপানের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে পড়াশুনা ও গবেষণা করেন।

দীর্ঘদিন তিনি রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

তাঁর প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে সোশ্যাল আইডিয়াজ অ্যান্ড সোশ্যাল চেঞ্জ ইন বেঙ্গল ১৮১৮–১৮৩৫, বাংলাদেশ অতীত বর্তমান, বাঙালীর সাধনা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাসের সন্ধানে।

অধ্যাপক সালাহ্উদ্দীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে নিয়মিত কলাম লিখতেন। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নানা আনুষ্ঠানিক ও ঘরোয়া আয়োজনে তিনি সানন্দে উপস্থিত হতেন। আগামী ২৩ অক্টোবর ইন্টারনেট সংবাদপত্রটির অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আট বছরের নির্বাচিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করার কথা ছিল সদ্য প্রয়াত এই জাতীয় অধ্যাপকের।

এই ইতিহাসবিদকে স্মরণ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, "তিনি আমাদেরই একজন ছিলেন। একজন অনুপ্রেরণাদায়ক অভিভাবক। প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সততায় যে প্রজন্মটি আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে প্রফেসর সালাহ্উদ্দীন সম্ভবত সেই প্রজন্মেরই শেষ প্রতিনিধি।"