হরমোনের সবজিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি

অধিক ফলন, গাছ ও পাতার বৃদ্ধিসহ নানা কারণে সবজি চাষে কৃষকরা ক্ষতিকর হরমোন ব্যবহার করছে।

বদরুল হাসান লিটন রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2014, 03:20 PM
Updated : 17 Oct 2014, 03:20 PM

বিশেষজ্ঞদের মতে, মানবদেহের জন্য এসব হরমোন মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলোর ব্যবহার নানা জটিল চর্ম রোগ ও ক্যান্সারের কারণ। এসব হরমোনের প্রভাবে প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। দেখা দিতে পারে বন্ধ্যাত্ব।

বিশেষ করে হরমোন ব্যবহার করা সবজি খেয়ে শিশুরা অধিকমাত্রায় মোটা হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে।

কৃষি বিভাগসহ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজশাহী অঞ্চলে সবজি চাষে এসব হরমোন ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কৃষিভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সবজি ক্ষেতে হরমোনের ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে বাড়ি বাড়ি এগুলো কৃষকদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও কৃষি গবেষক অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল ইসলাম বিডিনিইজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সবজিতে এসব হরমোন ব্যবহার করায় জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে।

জনস্বাস্থ্যে ক্ষতিকর হিসেবে ৩৫ বছর আগে জাপানে কৃষিতে এ হরমোন ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে বলে তিনি জানান।

“সেই হরমোন এখন বাংলাদেশের কৃষকদের হাতে তুলে দিচ্ছে কিছু আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।”

ড. মঞ্জুরুল ইসলাম আরো জানান, জিব্রালিক এসিডের (হরমোন) কাজ হচ্ছে কোষের সাইজ বড় করা। এটা কোনোভাবেই সবজিতে ব্যবহার হতে পারে না। জিব্রালিক এসিড মানুষের শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে।

“এটি মানবদেহে ক্যান্সারের অন্যতম কারণ,” বলেন তিনি।

তিনি আরো জানান, বর্তমানে আগাম যেসব টমেটো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোতে এক ধরনের হরমোন ব্যবহার করা হচ্ছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ হরমোনের ব্যবহারে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন চর্ম রোগ দেখা দেয়, প্রজনন ক্ষমতাও কমে যায়।

হরমোন ব্যবহার করা সবজি খেয়ে শিশুরা অধিকমাত্রায় মোটা হয়ে যেতে পারে এবং ভবিষ্যতে বন্ধাত্ব্যের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যেতে পারে।

রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগ বিশেষজ্ঞ খোন্দকার মেজবাউল ইসলাম জানান, সবজি ক্ষেত ছাড়াও এখন কৃষকরা ধান, পাট, পান, গম, আলু, সরিষা, ভুট্টা, চা-বাগান, ফলবাগান, ফুলচাষে প্ল্যান্ট হরমোন ব্যবহার করছে।

গাছ বৃদ্ধি, পাতা বৃদ্ধি, ফুল ও ফল ধরা বা অধিক ফলনের আশায় প্ল্যান্ট হরমোনের ব্যবহার হচ্ছে।