সমুদ্রসীমার বিরোধ নিরসনে হাসিনার প্রশংসায় মের্কেল

ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ অন্যান্য দেশের জন্য অনুসরণীয় হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2014, 02:50 PM
Updated : 16 Oct 2014, 06:26 PM

বৃহস্পতিবার ইতালির মিলানে দশম আসেম সম্মেলন শুরুর আগে এক বৈঠকে শেখ হাসিনার প্রশংসা করে জার্মান চ্যান্সেলর এই মন্তব্য করেন বলে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেসসচিব বিজন লাল দেব জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী বিজন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হককে উদ্ধৃত করে টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সম্মেলন শুরুর আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন অ্যাঙ্গেলা মের্কেল।”

বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন জার্মান চ্যান্সেলর।

বৈঠকে শেখ হাসিনা তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের কল্যাণে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ মের্কেলের কাছে তুলে ধরেন।

২০০৯ সালে সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এই খাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ২২৬ শতাংশ বাড়ানোর কথাও বাংলাদেশের পোশাকের অন্যতম প্রধান ক্রেতা ইউরোপের দেশটির সরকার প্রধানের কাছে তুলে ধরেন তিনি।

জার্মান চ্যান্সেলর সরকারের এই পদক্ষেপগুলোতে সন্তোষ প্রকাশ করেন বলে বিজন লাল দেব জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং স্থিতিশীলতা নিয়ে নিজের সন্তোষের কথাও তুলে ধরেন মের্কেল।

ইতালির মিলানে দশম আসেম সম্মেলনে বৃহস্পতিবার চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খা ছিয়াংয়ের সঙ্গে আলাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আসেম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খা ছিয়াংয়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন শেখ হাসিনা।

এছাড়া উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন এবং ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসান আল বলখিয়াহর সঙ্গেও তার শুভেচ্ছা বিনিময় হয়।

গ্রিক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক

আসেম সম্মেলনের ফাঁকে বৃহস্পতিবার গ্রিক প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও সামারাসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন শেখ হাসিনা।

পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, টানা দুই মেয়ারে এবং মোট তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন আন্তোনিও সামারাস। তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বগুণের প্রসংশাও করেন।

সামারাস প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, গ্রিসে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা কঠোর পরিশ্রমী এবং তারা তার দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধেও বাংলাদেশ ও গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী একসাথে কাজ করে যাওয়ার বিষয়ে মতৈক্য প্রকাশ করেন বলেও শহীদুল হক জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তার সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ দেখাচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছয় ভাগের ওপর ধরে রাখায়ও শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন সামারাস।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “আলোচনায় গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান আমাদের প্রধানমন্ত্রী। উনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করে গ্রিসেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সফরের আমন্ত্রণ জানান।”

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আব্দুস সোবহান সিকদার, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, ইতালিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদুত শাহ্দৎ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব বিজন লাল দেব প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রী এদিন সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লফভেনের সঙ্গেও বৈঠক করেন।