মহাসড়কে যানের চাপ, গাজীপুরে দীর্ঘ জট

কোরবানির ঈদ ও পূজা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করায় মহাসড়কগুলোতে গাড়ির চাপ তৈরি হয়েছে। কোন কোন স্থানে দেখা গেছে দীর্ঘ যানবাহনের সারি।

কুমিল্লা প্রতিনিধিগাজীপুর, টাঙ্গাইল ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2014, 03:40 PM
Updated : 2 Oct 2014, 03:40 PM

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে কোনাবাড়ী পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট রয়েছে।

মৌচাক এলাকায় মহাসড়কে খানাখন্দ মেরামতের কাজ,শাখা সড়ক থেকে যানবাহন মহাসড়কে ওঠায় ও সড়কে গরু বোঝাই ট্রাকের চাপ থাকার কারণে এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

গাজীপুরের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ী থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সড়কে শত শত যানবাহন আটকে পড়ায় চরম দুর্ভোগের স্বীকার হন ঘরমুখো যাত্রীরা।

“পাঁচ কিলোমিটার পথ যেতে ৩ ঘন্টারও বেশি সময় লাগছে। দুপুরের দিকে এ যানজট কিছুটা কমলেও বিকেলের দিকে যানজটের আকার আবার বাড়তে থাকে। এ যানজট মহাসড়কের চান্দনা-চৌরাস্তা, ভোগড়া বাইপাস ও কোনাবাড়ী থেকে কালিয়াকৈরের চন্দ্রা পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।”

তিনি জানান, সড়কের কোনাবাড়ী থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায়, সড়কের মৌচাক এলাকায় সড়কের মেরামত করার কারণে সড়কে চলাচলরত যানবাহনকে  ‘ওয়ান ওয়ে’তে চলাচল করতে হচ্ছে।

এছাড়া শাখা সড়ক থেকে মহাসড়কে বিপুল পরিমাণ যানবাহন ওঠার কারণেও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে সড়কে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া ও গরু ভর্তি ট্রাকগুলো ধীর গতিতে চলার কারণও যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারণ।

অপরদিকে মাওনা মহাসড়ক পুলিশ থানার ওসি মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, “বিকেলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা হঠাৎই বেড়ে গেছে। গাজীপুরের অংশে ফোর লেনের কাজ চলছে বলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে স্থানে স্থানে ছোটখাট খানাখন্দ থাকায় থেমেথেমে  যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

“এই যানজট নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।”

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাড়তি চাপ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লা অংশের বিভিন্ন স্থানে অত্যন্ত ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করছে। তবে পুলিশ বলছে নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে তারা।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কুমিল্লা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দিনের শুরুতেই যানবাহনের চাপ থাকায় মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানবাহনের চলাচল ধীরগতিতে চলাচল শুরু করে ।

ময়নামতি সেনানিবাস, আলেখারচর,নিমসার,চান্দিনা,মাধাইয়া, ইলিয়টগঞ্জ, গৌরীপুর এলাকায় দেখা যানবাহনের দীর্ঘ সারি।

চালকদের আগে যাবার প্রতিযোগিতায় রাস্তায়যান চলাচলে বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন জটের সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ।

ময়নামতি হাইওয়ে থানার এসআই মো. এনামুল হক বলেন, “মহাসড়কের কুমিল্লার আলেখারচর থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় বিভিন্ন স্থানে যানবাহনের চাপ রয়েছে।

“তবে এ চাপ যেন যানজটে পরিণত না হতে পারে সেজন্যে আমরা নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আর কোথাও যানবাহন আটকে থাকার খবর আসলে আমরা দ্রুত সেখানে ফোর্স মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসছি।”

মহাসড়কের চান্দিনায় অবস্থানকালীন সময়ে পূর্বাঞ্চলীয় হাইওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা বলেন, “এখন পর্যন্ত কোথাও যানজট দেখা যায়নি। তবে কোথাও কোথাও যানবাহনের চাপ আছে।”

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কেও গাড়ির চাপ

রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ বাড়ছে দেশের ব্যস্ততম মহাসড়ক ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পর থেকে এই সড়কে যানজট না থাকলেও দুদিকেই গাড়ির চাপ রয়েছে। তবে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই মহাসড়কে যানজটের আশঙ্কা করছে মহাসড়ক পুলিশ কর্তৃপক্ষ।

মহাসড়ক পুলিশের গোড়াই থানার এলেঙ্গা ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুজ্জামান রাজ বলেন, “রাজধানী ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গের ১৬টিসহ ২৭টি জেলার যানবাহন চলাচল করে এ সড়কে। ঈদের আগে বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘যানজট’ লাগার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

“রাতে মহাসড়কে অতিরিক্ত গরুর ট্রাক ও রাজধানী থেকে উত্তরবঙ্গগামী ফিটনেসবিহীন গাড়ি এসে পড়ায় এই যানজটের আশঙ্কা রয়েছে।”

</div>  </p><p> </p>