জ্যেষ্ঠ এই মন্ত্রী বলেছেন, “রাষ্ট্রপতি হজে গেছেন। এই আনুষ্ঠানিকতা (অব্যাহতি) যেহেতু রাষ্ট্রপতির মাধ্যমেই করতে হয়, তাই উনি আসলে বাকি আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।”
মন্ত্রিসভায় সহকর্মী লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়ে বুধবার নিজের নির্বাচনী এলাকা শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন মতিয়া। তারা দুজনই আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে মন্তব্যের পর থেকে লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে।
ধর্মকে কটাক্ষ করার অভিযোগ এনে লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি খোদ আওয়ামী লীগ থেকেও উঠেছে, দাবি উঠেছে তাকে দল থেকে বাদ দেওয়ারও।
এরপর বুধবার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মন্ত্রিসভা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীকে।
বর্তমানে মেক্সিকোতে থাকা ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা ছিল না মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে।
মন্ত্রীদের নিয়োগ, দপ্তর বদল এবং অব্যাহতি দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকেই আদেশ জারি করা হয়।মন্ত্রিপরিষদ সচিবও এখন রয়েছেন হজে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবের চলতি দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগেরই ভারপ্রাপ্ত সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. নজরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সরকারের নির্দেশনার অপেক্ষা করছি। এখনো (বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টা) কোনো নির্দেশনা পাইনি।”
সরকারের নির্দেশনা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই লতিফ সিদ্দিকীকে অব্যাহতি দিয়ে আদেশ জারি করা হবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।”
লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রধানমন্ত্রী কোনো দ্বিধা করেননি বলে দাবি করেন মতিয়া চৌধুরী।
“আমাদের নেত্রী আমাদের চেয়ে অনেক বেশি পরহেজগার। তিনি কিন্তু এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেন নাই। তিনি সঙ্গে সঙ্গে লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছেন এবং লতিফ সিদ্দিকী আর আগের মতো মন্ত্রিসভার সদস্য নাই।”
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শাখা এবং সহযোগী সংগঠনগুলো সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকেও বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছেন।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া বলেন, “হজ্ব বা তাবলীগ নিয়ে এই ধরণের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করাকে আমরা মুসলমানরাতো এটা অব্যশই ঘৃণা করব। আমার মনে হয়, অন্য ধর্মের লোকও এটা সমর্থন করবে না।
“তিনি (লতিফ সিদ্দিকী) যা করেছেন, তার জন্য তাকেই মাশুল দিতে হবে। এটার দায়দায়িত্ব শেখ হাসিনার সরকার বা আওয়ামী লীগ গ্রহণ করবে না।”
লতিফ সিদ্দিকীর মস্তিষ্কের সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তার দলীয় সহকর্মী মতিয়া বলেন, “বঙ্গবন্ধু তো তাবলিগ জামাতের জায়গা কাকরাইল মসজিদে দিলেন। আর আমাদের নেত্রী এসে মাঠটা দিলেন বিশ্ব ইজতেমার জন্য। আর সেখানে এই সমস্ত বাজে কথা বলা কেউই সমর্থন করবে না।”