দল থেকেও ‘বাদ পড়ছেন’ লতিফ সিদ্দিকী

হজ নিয়ে মন্তব্যের জেরে মন্ত্রিসভা থেকে ‘অব্যাহতির’ পর প্রধানমন্ত্রী এবার লতিফ সিদ্দিকীকে  দল থেকেও সরিয়ে দিতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা।

সিলেট প্রতিনিধিমঞ্জুর আহমেদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2014, 05:02 AM
Updated : 2 Oct 2014, 05:02 AM

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে ঢাকা ফেরার পথে বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটে এক ঘণ্টার যাত্রাবিরতি করেন প্রধানমন্ত্রী।

সেখানে বিমানবন্দরে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় শেখ হাসিনার।

প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ফ্লাইট ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করার পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ সাংবাদিকদের বলেন, “হজ নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য লন্ডনে অবস্থানকালেই লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা থেকে অব্যাহতির নির্দেশ দিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন। এখন দল থেকেও তাকে অব্যাহতি দেয়া হবে বলে তিনি বলেছেন।”

হজ নিয়ে মন্তব্যের জন্য ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে আগের দিন এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত গত রোববার নিউ ইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে বক্তব্য থেকে।

সেদিন টাঙ্গাইল সমিতির এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন,“আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী।”

তার পুরো বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

ওই ভিডিওতে তাকে বলতে দেখা যায়,“এ হজে যে কত ম্যানপাওয়ার (জনশক্তি) নষ্ট হয়। এই হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গেছেন। এদের কোনো কাজ নাই। কোনো প্রডাকশন নাই, শুধু ডিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা বিদেশে দিয়ে আসছে।”

অনুষ্ঠানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,“কথায় কথায় আপনারা জয়কে টানেন কেন। ‘জয় ভাই’ কে?

“জয় বাংলাদেশ সরকারের কেউ নয়। তিনি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ারও কেউ নন।”

তার এই বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে আলোচনার ঝড় তোলে। এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বক্তৃতা-বিবৃতিও আসতে থাকে।

সরকারের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এরশাদ মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর গ্রেপ্তার দাবি করেন। বিএনপি তাকে বরখাস্তের দাবি জানায়। ইসলামী দলগুলো এই মন্ত্রীর বিচারের দাবিতে আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছে।

ভিনদেশে করা ওই বক্তব্য নিয়ে বুধবার বাংলাদেশের কয়েকটি আদালতে লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। পাঁচটি মামলায় তাকে তলব করে আদালত সমনও জারি করেছে।

</div>  </p>