শান্তি ও কল্যাণ কামনায় মহাসপ্তমী শুরু

প্রাণীকূলের শান্তি ও কল্যাণ কামনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমী। আনন্দময়ী দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শুরু হয় সনাতন ধর্মাবলম্বী বাঙালিদের সবচেয়ে বড় এ উৎসব।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Oct 2014, 04:25 AM
Updated : 1 Oct 2014, 04:36 AM

বুধবার সকাল ৮টার পরপর দেবী স্থাপন, প্রাণ প্রতিষ্ঠা ও চক্ষুদানের মাধ্যমে শুরু হয় দেবীর আরাধনা।

রাজধানীর বিভিন্ন মণ্ডপে দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধুপ দিয়ে পূজা করেন ভক্তরা।

মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ সাহা মনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মহাবিশ্বের সব প্রাণীর শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে ভক্তরা মায়ের শ্রীচরণে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণের মাধ্যমে দেবীর কৃপা প্রার্থনা করেন। সন্ধ্যায় আরতি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।”

সপ্তমী পূজার পর বৃহস্পতিবার সকালে অষ্টমী পূজা। এদিন পুষ্পাঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যায় অঞ্জলি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে রাজধানীসহ সারা দেশের মণ্ডপগুলোতে।

মহাসপ্তমীতে সকাল থেকেই রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির, রমনা কালীমন্দির, রামকৃষ্ণ মিশনসহ অন্যান্য এলাকার মণ্ডপগুলোতে ভিড় করছেন দেবীভক্তরা।

সনাতন ধর্মরীতি অনুসারে সাধারণত আশ্বিন শুক্লপক্ষের ষষ্ঠ দিন অর্থাৎ ষষ্ঠী থেকে দশম দিন পাঁচ দিন দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

এই পাঁচ দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়া দশমী নামে পরিচিত। আর পুরো পক্ষকে বলা হয় দেবীপক্ষ। দেবীপক্ষের সূচনা হয় পূর্ববর্তী অমাবস্যার দিন, যেটি মহালয়া নামে পরিচিত।

পুরাণ অনুসারে, ত্রেতা যুগে লঙ্কার রাজা রাবণকে বধের জন্য রামচন্দ্র সপ্তমীর ক্ষণে দেবি দুর্গার পূজা করেছিলেন। এরপর থেকেই শুরু শারদীয় দুর্গোৎসব।

প্রচলিত ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এক বছর পর পর দেবী দুর্গা আসে বাবার বাড়িতে। এসেই অবস্থান নেয় বেল গাছে। ষষ্ঠীর দিন সন্ধ্যায় বোধনের মাধ্যমে তাকে আহ্বান করা হয়। একইদিনে হয় অধিবাস। পরদিন সপ্তমীর সকালে নবপত্রিকা স্থাপনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল পূজার।

শরৎকালে অবতার শ্রী রামচন্দ্র দেবীকে আহ্বান করেছিলেন বলে এ পূজা শারদীয় দুর্গা পূজা নামে পরিচিত। এটাকে অকাল বোধনও বলা হয়। কারণ শ্রীরামচন্দ্র অকালেই দুর্গাকে ডেকেছিলেন।

এবছর রাজধানীতে ২১৮টি সহ সারাদেশে প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার মণ্ডপে দুর্গা পূজা হচ্ছে।

শুক্রবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বির্সজনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শেষ হবে।

প্রতিবার দুর্গার আগমনের ওপর পুণ্যার্থীদের ভাল-মন্দ, সুখ-দুঃখ জড়িয়ে আছে বলে বিশ্বাস করেন বাঙালি হিন্দুরা। এবার দেবী আসছে নৌকায় চড়ে। নৌকায় এলে পৃথিবীতে শস্য ও সমৃদ্ধি আসে।

অপরদিকে দেবী এ বছরের মতো প্রস্থান করবে দোলায় চড়ে। এতে পৃথিবীতে রোগ-শোক ও বালাই বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। এজন্য দেবীর আরাধনাকারীরা প্রার্থনা করবেন যাতে বিপদনাশিনী দুর্গা সব বিপদ থেকে তাদের রক্ষা করে।