হাসিনা-মোদী বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন চলাকালে নিউইয়র্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2014, 09:07 AM
Updated : 21 Oct 2014, 06:49 PM

তিনি বলেন, বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ও স্থল সীমান্ত চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন।

মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় তুলে ধরেন মন্ত্রী।

এ বছরের মে মাসে মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই ছিল দুদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠক।

মন্ত্রী বলেন, “প্রথম বৈঠক হলেও পরিবেশ ছিল অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ, উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ। এসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং তার সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে মোদীর মন্তব্য উদ্ধৃত করেন মাহমুদ আলী, “বঙ্গবন্ধু নে বাংলাদেশ বানায়া, আউর উনকো বেটি নে বাংলাদেশ কো বাঁচায়া।”

“এটা নরেন্দ্র মোদির এসেসমেন্ট। এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তিনি আরেকটা কথা বলেছেন, ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবেচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী

বৈঠকে ১৯৭৪ সালের স্থলসীমানা চুক্তির অনুসমর্থন ও তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তির দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়টি শেখ হাসিনা মোদীর কাছে বিশেষভাবে তুলে ধরেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

“ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানান যে, তার সরকার এ বিষয়গুলো দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে সক্রিয়ভাবে ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।”

মন্ত্রী জানান, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট সহযোগিতা স্থাপনের বিষয়ে ভারতের সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী। জবাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সার্ক স্যাটেলাইট স্থাপনের বিষয়ে তার সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন ।

এক প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ আলী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে বেশ আগ্রহী। দুদেশের সর্বোচ্চ পর‌্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সফরের দিন নির্ধারণ করা হবে।

তিনি জানান, দক্ষিণ এশিয়ার সব রাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও উন্নয়নে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন মোদী। এসময় শেখ হাসিনাও এবিষয়ে একই অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন ।

এর আগে ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জাতিসংঘ মহাসচিব ৫ জানুয়ারির নির্বাচন পরবর্তী সময়ে দেশে শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখতে পারার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান।”

জাতীয় ও  আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নারী ও মেয়ে শিশুদের সাক্ষরতা, শিক্ষার ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা ও শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সম্প্রতি বাংলাদেশের শীর্ষ স্থান অর্জনেরও প্রশংসা করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে অংশ নেয়ার পাশাপাশি মন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিব নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাগুলোর বিভিন্ন সভায় বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।