আদালতে জবানবন্দি দিচ্ছেন জজ মিয়া

একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় সাক্ষী হিসেবে বহুল আলোচিত জজ মিয়া আদালতে জবানবন্দি দিচ্ছেন।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2014, 06:55 AM
Updated : 30 Sept 2014, 07:26 AM

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিশেষ এজলাসে বিচারক মো. শাহেদ নূর উদ্দিন তার জবানবন্দি নেওয়া শুরু করেন।

ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি আবু আবদুল্লাহ ভূইয়া জানান, এর আগে জজ মিয়ার বোন খোরশেদা খাতুনের জেরা শেষ হয়।

সাবেক সিআইডি কর্মকর্তা রুহুল আমিন ও আব্দুর রশিদ একুশে অগাস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে মামলার এই দুই তদন্ত কর্মকর্তা বর্তমানে এই মামলারই আসামি। 

২০০৪ সালের রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ওই গ্রেনেড হামলার পর সেনবাগের বিরকোট গ্রাম থেকে জজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে ‘স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি’ আদায়ের পর তাকে আসামি করেই চাঞ্চল্যকর এই মামলার অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

কিন্তু পরে অধিকতর তদন্তে দেখা যায়, ওই মামলাকে ‘ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য’ বিগত চারদলীয় জোট সরকারের নির্দেশে সিআইডি জজ মিয়াকে নিয়ে নাটক সাজানোর চেষ্টা করে।

এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বের জজ মিয়ার মা জোবেদা খাতুন আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এই মামলায় দোষ স্বীকার করে জজ মিয়ার জবানবন্দির বিনিময়ে তাকে নিয়মিত অর্থ দেওয়ার পাশাপাশি বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার প্রলোভনও দেখানো হয়েছিল।

পরে তার বোন খোরশেদাও তার সাক্ষ্যে মায়ের দেওয়া বক্তব্যই সমর্থন করেন।  আদালতে খোরশেদা বলেন, ভাইকে মামলা থেকে বাঁচাতে ভিটেবাড়ি বিক্রি করতে হয়েছে তাদের।  পরে সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ফজলুল হককে সব ঘটনা খুলে বললে তিনি জজ মিয়াকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার উদ্যোগ নেন। 

৮ সেপ্টেম্বর জোবেদা খাতুন এই মামলায় জবানবন্দি দেওয়ার পর তাকে জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। খোরশেদার পর জজ মিয়াও আদালতে সাক্ষ্য দেন।

খোরশেদার জবানবন্দি নেওয়ার পর বিচারক ২৯ এবং ৩০ সেপ্টেম্বর তাকে জেরার জন্য দিন ঠিক করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, এই মামলায় মোট ৪৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে খোরশেদাকে নিয়ে এ পর্যন্ত ১০৩ জনের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শোভাযাত্রার আগে ওই গ্রেনেড হামলায় দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ অন্তত ২৪ জন নিহত ও শতাধিক আহত হন।

আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ওই হামলা চালানো হয়েছিল বলে পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে।