কেরানীগঞ্জে ৪ খুন: আরেকজন গ্রেপ্তার

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চাঞ্চল্যকর চার খুনের ঘটনায় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকও সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2014, 06:29 AM
Updated : 2 Oct 2014, 01:18 PM

গ্রেপ্তার নাসির (২৫) হত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন বলে কেরানীগঞ্জ পুলিশের দাবি।

উল্লাপাড়া থানার ওসি তাজুল হুদা বলেন, “কেরানীগঞ্জ পুলিশের একটি দল গতরাতে (সোমবার) এসেছিল। ভোরে তারা উপজেলার ঊধুনিয়া ইউনিয়নের পংখারুয়া গ্রাম থেকে নাসির নামে একজনকে চার খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে।”

ঢাকা জেলা পুলিশের এএসপি কাজী মাকসুদা লিমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হত্যাকাণ্ডের সময় পাঁচজন ঘটনাস্থলে ছিল। সে সময় নাসিরও সেখানে ছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি।”

গত ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কদমপুর এলাকার ছয়তলা একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় একই পরিবারের চারজনের হাত-পা চোখ বাঁধা লাশ পাওয়া যায়।

ওই বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক সোহেল এবং বাসা ভাড়া নিতে সহযোগিতা করা আক্কাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং ওই বাসায় পাওয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও কয়েকশ ভিজিটিং কার্ডের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালিয়ে এক দিন পর নিহতদের পরিচয় জানতে পারে পুলিশ।

নিহতরা হলেন- সাজু আহমেদ (৩৫), তার স্ত্রী রাজিয়া বেগম (২৬), তাদের ছেলে ইমরান (৫) ও মেয়ে সানজিদা (৩)। তাদের বাড়ি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের টেপ্রিগঞ্জ ইউনিয়নের গাজকাটি গ্রামে।

এরপর ২৫ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এরা হলেন- রানি বেগম, মুক্তা বেগম, শাহিদা বেগম, রফিক, আবদুল মজিদ, সুমন ও জনি।

পরদিন পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, “গ্রেপ্তাররা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য। নিহত সাজুও সেই দলে ছিলেন। নবাবগঞ্জে একটি বাসায় তারা একইসঙ্গে ডাকাতি করেছিলেন। মূলত লুট করা সম্পদের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়েই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।”

রফিকের স্ত্রীর ও জনির স্ত্রীর সঙ্গে সাজুর ‘অবৈধ সম্পর্ক’ ছিল জানিয়ে হাবিবুর রহমান বলেন, “এটাও হত্যাকাণ্ডের কারণ হয়ে থাকতে পারে। জিজ্ঞাসাবাদে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।”

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সুপার সেদিন জানান, রফিক ও সুমন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। তাদের পালিয়ে থাকতে সহায়তা করে গ্রেপ্তার তিন নারী। তারা পুলিশের গতিবিধির ওপরও নজর রাখছিল।

অ্যাডিশনাল এসপি মোনালিসা বেগম সেদিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান সাজু এক সময় ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় রিকশা চালাতেন। পরে ট্রাকের হেলপারের কাজ করেন কিছুদিন। তিন বছর আগে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে ট্রাক চালাতে শুরু করেন। ওই লাইসেন্সও তার বাসায় পাওয়া যায়।

“এক সময় বেশি টাকার লোভে মাদক বিক্রি এবং ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য হিসাবে সে কাজ শুরু করে। মূলত এটাই তার জীবননাশের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।”

গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে জনি গত ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন, যাতে অন্যদের সংশ্লিষ্টতাও উঠে আসে বলে আদালত পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের প্রধান কোর্ট ইন্সপেকটর মো. আসাদুজ্জামান জানান।