চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই উৎসবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এরইমধ্যে তারা সব পূজা মণ্ডপে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন।
মঙ্গলবার ষষ্ঠীপূজার মধ্যে দিয়ে শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।
বন্দরনগরীর কোনো পূজা মণ্ডপকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত না করলেও ‘অধিক গুরুত্বপূর্ণ’; ‘গুরুত্বপূর্ণ’ এবং ‘সাধারণ’- এই তিন ভাগে ভাগ করেছে পুলিশ।
নগরীর বড় কয়েকটি মণ্ডপে পুলিশের পক্ষ থেকে গোপন ক্যামেরা বসানোর কথা ভাবা হচ্ছে জানিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, “এসব ক্যামেরা নগর পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সংযুক্ত করা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন পূজা কমিটির নেতাদের বলেছি তারা যেন পূজার আয়োজনে স্থানীয় লোকদের সম্পৃক্ত করেন। এছাড়া পুলিশের পাশাপাশি প্রতিটি পূজামণ্ডপে অতিরিক্ত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ ও তাদের ‘মেটাল ডিটেক্টর’ দেয়ার জন্য পূজা কমিটিগুলোকে অনুরোধ করেছি।”
তিনি জানান, প্রতিটি মণ্ডপে রেজিস্ট্রার খাতা রাখতে বলা হয়েছে, যাতে পুলিশ কর্মকর্তারা সেখানে পরিদর্শন করে সই করতে পারেন।
গত বৃহস্পতিবার মাহনগর পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে নগর পুলিশের কমিশনার আব্দুল জলিল মণ্ডল জানিয়েছিলেন, পূজায় নগরীতে পুলিশের ১৫টি ভ্রাম্যমাণ ও ৩০টি পিকেট দলের পাশাপাশি চারটি স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ করবে।
এছাড়া ‘যে কোনো পরিস্থিতি’ মোকাবেলায় গোয়েন্দা পুলিশের পাশাপাশি, এপিবিএন, সোয়াত ও র্যাবের টহল দল এবং
গোয়েন্দা পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট মাঠে থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনার।
পুলিশের হিসাবে চট্টগ্রাম নগরীর ১৬টি থানা এলাকায় মোট ২২৭টি পূজা মণ্ডপে এবার পূজা হবে। তবে সার্বজনীন, ব্যক্তিগত ও স্থায়ীসহ মণ্ডপের সংখ্যা ২৭৯টি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রত্নাঙ্কর দাশ টুনু।
তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো নিরাপত্তার অভাব কিংবা হুমকির আশঙ্কা করছি না। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।”
হিন্দু শাস্ত্রমতে এ বছর নবমী ও বিজয়া দশমীর পূজা হবে একই দিনে- আগামী ৩ অক্টোবর। তবে দেবীর বিসর্জন ৪ অক্টোবর হবে বলে রত্নাঙ্কর দাশ টুনু জানান।
ওই দিন সকাল ১০ থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন শেষ করতে মণ্ডপগুলোকে অনুরোধ করা হয়েছে।
বনজ মজুমদার জানান, এবছরও অধিকাংশ পূজা কমিটি পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন দেবে। তাই সেখানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।