‘আদিবাসীদের এগিয়ে আনতে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে’

বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার এবং সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন গবেষকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2014, 05:00 PM
Updated : 23 Sept 2014, 05:00 PM

এজন্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোকে তাদের প্রাপ্য স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ১৬৯তম কনভেনশন অনুমোদন করা জরুরি বলে মনে করছেন গবেষকরা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উন্নয়ন নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো।

রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে মঙ্গলবার একটি কর্মশালায় এ মতামত ব্যক্ত করেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতিনিধি ও গবেষকরা। অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিল আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।

আইএলও  পরিচালিত ‘বিল্ডিং ক্যাপাসিটিস অন ইন্ডিজিনাস অ্যান্ড ট্রাইবাল পিপলস ইস্যু ইন বাংলাদেশ: রাইটস অ্যান্ড গুড প্র্যাকটিসেস’ প্রকল্পের মূল্যায়ন প্রতিবেদন বিষয়ে অংশীদারি সংস্থাগুলো অবহিত করার উদ্দেশ্যে এ কর্মশালাটি আয়োজিত হয়।প্রকল্পটি অর্থায়নে সহায়তা করেছে ডেনমার্ক সরকার।

মূল্যায়ন প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাদেকা হালিম।

উপস্থাপন করার সময় তিনি বলেন,“ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোকে বাংলাদেশ সরকার ‘আদিবাসী’ হিসেবে উল্লেখ না করতে চাইলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমরা যখন তাদের ‘আদিবাসী’ বলে উল্লেখ করি, তখন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বাধা আসে না। এ থেকে বোঝা যায় এ জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে আনার ব্যাপারে সরকারের আন্তরিকতা রয়েছে।”

“আইএলও  কনভেনশন ১৬৯ অনুমোদনের ব্যাপারে সরকারের উপর চাপ রয়েছে। তবে তা এখনো অনুমোদিত হয়নি। আদিবাসীদের উন্নয়ন সঠিকভাবে এগিয়ে নেওয়ার  জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি অনুমোদন করা।”

তিনি জানান, বাংলাদেশে পাহাড় ও সমতল অঞ্চলসহ অন্তত ৫৪টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত ১০টি প্রায় বিলুপ্তির পথে।

সব আদিবাসী নারীদের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন গবেষক সাদেকা হালিম।

“আদিবাসী নারীরা অপেক্ষাকৃত বেশি নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে থাকে, এটা স্পষ্ট। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের উচ্চশিক্ষার হার ও কর্মদক্ষতা (স্কিল) বাড়ানোর জন্য তাদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।”

এছাড়া ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বিষয়ক যে কোনো সরকারি-বেসরকারি প্রকল্পে আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় কমিটিসহ গোষ্ঠীগুলোর প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করেন তিনি।

এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়া দেশের সমতল অঞ্চলে বসবাস করা আদিবাসী জনগোষ্ঠীদের জন্য অঞ্চলভেদে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশও করা হয় প্রতিবেদনে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব বাসুদেব আচার‌্য বলেন, “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের বিষয়ে সাধারণ মানুষসহ সরকারি কর্মকর্তাদের উদাসীনতা রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হিসেবে আমার জন্যও এটি খুব কষ্টকর। এজন্য সরকারের লোকবলেরও এ বিষয়ে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের বিষয়টি চালিয়ে যেতে হবে।”

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় আইএলও’র সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার টি আই এম নুরুন্নবী খানসহ অংশীদার বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।