মহালয়ায় শুরু দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা

‘মহাশক্তি, মহামায়া ও দুর্গতিনাশিনী’ দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে ‘নেমে’ আসার আহ্বানের মাধ্যমে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2014, 04:50 PM
Updated : 23 Sept 2014, 04:50 PM

মঙ্গলবার মহালয়া পূজার মাধ্যমে বাঙ্গালী হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে বলে জানান মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ সাহা মনি।

২৯ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীতে দুর্গার বোধনের মাধ্যমে শুরু হবে মূল পূজা। ৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বির্সজনের মধ্যে দিয়ে দুর্গোৎসব শেষ হবে।

মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ সাহা মনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এবার রাজধানীর ২১৮ টি সহ সারাদেশে প্রায় ২৮ হাজার ৫শ মণ্ডপে পূজা হবে।

মঙ্গলবার ভোর থেকে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরসহ সারাদেশে শুরু হয় মহালয়ার আচার-অনুষ্ঠান। বুধবার মহালয়ার বিশেষ অনুষ্ঠান হবে।  

নারায়ণ সাহা মনি বলেন, “প্রথমে চণ্ডীপাঠ করে দেবীকে আহ্বান জানানো হয়। এ সময় মঙ্গলঘট স্থাপন করে তাতে ফুল, তুলসী ও বেলপাতা দিয়ে পূজা করা হয়। এছাড়া সারাদিন বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় মহালয়া।”

চণ্ডিপাঠের পাশাপাশি ভক্তরা ঢাক-কাঁসা ও শঙ্খ বাজিয়ে দেবীকে আহ্বান জানান।

নারায়ণ সাহা মনি বলেন, “মূলত মহালয়া, বোধন আর সন্ধিপূজা-এই তিন পর্ব মিলে দুর্গোৎসব।”

তিনি বলেন, পুরাণ মতে, মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হয় দেবী পক্ষের। এর আগের পক্ষ হলো পিতৃপক্ষ। এই পক্ষে ভক্তরা তাদের পূর্বপূরুষের আত্মার প্রীতির জন্য অন্ন-জল নিবেদন করে থাকেন। শাস্ত্রে একে বলা হয় তর্পণ।

সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, মহালয়ার প্রাক সন্ধ্যায় অর্থাৎ শুক্লপক্ষের চতুর্দশীতে কাত্যায়নী মুনির কন্যা রূপে মহিষাসুর বধের জন্য দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে।

এ বছর দেবীর আগমন হবে নৌকায় করে, যার অর্থ শস্য ও সমৃদ্ধি। আর দেবী গমন করবেন দোলায় করে।

মহালয়ায় শ্রাদ্ধ

হিন্দু পুরাণ মতে, জীবিত ব্যক্তির পূর্বের তিন পুরুষ পর্যন্ত পিতৃলোক বা যমলোকে বাস করেন। আর এই পিতৃলোকের অবস্থান স্বর্গ ও মর্ত্যের মাঝামাঝি স্থানে।

পিতৃলোকের শাসক মৃত্যুদেবতা যম। তিনি সদ্যমৃত ব্যক্তির আত্মাকে মর্ত্য থেকে পিতৃলোকে নিয়ে যান। এরপর পরের প্রজন্মের একজনের মৃত্যু হলে আগের প্রজন্মের একজন পিতৃলোক ছেড়ে স্বর্গে গমন করেন। একই সঙ্গে পরমাত্মায় বা ঈশ্বরে বিলীন হন।

এ কারণে মহালয়ায় হিন্দুরা তাদের পূর্বে মারা যাওয়া তিন প্রজন্মের ব্যক্তিদের স্মরণ বা তর্পণ করে থাকে। এ দিন শ্রদ্ধানুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি দেন তারা।