একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক হাসান আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানিতে প্রসিকিউশনের প্রস্তুতির ঘাটতি থাকায় সোমবার অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউশনের প্রস্তুতির ঘাটতির জন্য আগামী ২২ অক্টোবর পর্যন্ত এ মামলার কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।
একইসঙ্গে প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীকে আগামীতে শুনানির জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে আসতেও পরামর্শ দিয়েছে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-১।
সোমবার সকালে হাসান আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি শুরু করেন প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী। শুনানির এক পর্যায়ে তিনি ট্রাইব্যুনালের কাছে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন জানান।
এসময় বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, “আপনাদের দাখিলকৃত প্রতিবেদনে যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণাদি নেই। আসামি পলাতক বলে কি আপনাদের নিকট মামলার গুরুত্ব নাই?
“আপনারা কোনো মামলার তদন্তে বা শুরুতে গুরুত্ব দেন না, কিন্তু রায়ের পর ঠিকই একে অন্যের সমালোচনা করতে পারেন।”
মামলার নথিপত্রের দুর্বলতা তুলে ধরে ট্রাইব্যুনাল আরো বলে, “হাসান আলীকে আপনারা রাজাকার কমান্ডার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কিন্তু এই রাজাকার কমান্ডার প্রমাণে রাজাকারদের তালিকা কোথায়?”
এসময় প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত প্রসিকিউটর আবুল কালামকে তালিকা জমা দিতে বলেন। আবুল কালাম তখন জানান, তিনি অনেক খোঁজাখুজি করেও তালিকা পাননি।
তখন ট্রাইব্যুনাল বলে, “অপরাধ সংগঠনের জায়গায় বহু ডকুমেন্ট রয়েছে। এলাকায় গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে আসেন। অপরাধ প্রমাণে অনেক তথ্য পাবেন।
“আপনারা আদালতে অনেক পত্রিকার কাটিং দিয়েছেন। তাতে আসামির সম্পৃক্ততা কী আছে, তার জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন।”
এর আগেও বেশ কয়েকবার কয়েকটি মামলায় প্রসিকিউশনের প্রস্তুতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে যুদ্ধাপরাধের বিচারে ক্রিয়াশীল দুই ট্রাইব্যুনালই।
মো. কামারুজ্জামানের মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির সময় সাবেক প্রসিকিউটর এ কে এম সাইফুল ইসলামের প্রস্তুতির অভাব নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-২।
আপিলের রায়ে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমে আমৃত্যু কারাদণ্ড হওয়ার পর ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি বলেছিল, যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকলেও তা উপস্থাপনে ব্যর্থতা ছিল প্রসিকিউশনের।