ফেলানী হত্যার পুনর্বিচার শুরু

কুড়িগ্রামের কিশোরী ফেলানী হত্যার বিচার পুনরায় শুরু হয়েছে ভারতের একটি আদালতে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2014, 10:30 AM
Updated : 23 Sept 2014, 03:01 PM

সোমবার কুচবিহারে বিএসএফ এর সেক্টর সদর দপ্তরের বিশেষ আদালতে এ হত্যাকাণ্ডের পুনর্বিচার শুরু হয় বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ।

মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, ভারতের কুচবিহারে বিএসএফ সদর দপ্তরে স্থাপিত বিশেষ আদালতের স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টে এ বিচার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দুই একদিনের মধ্যেই সাক্ষ্য দিতে এবং আদালতকে সহযোগিতা করতে তিনিসহ ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম, মামা আব্দুল হানিফ ও কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম আব্রাহাম লিংকন ভারতে যাবেন।

এ ব্যাপারে ভারত সরকারের পক্ষে বিএসএফ যেকোনো সময় আমন্ত্রণ জানাবে বলে ‘ইঙ্গিত’ পাওয়া গেছে।

তিনি আরো বলেন, ফেলানী হত্যার সঠিক বিচার না পেয়ে ২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ভারতীয় হাই কমিশনারের মাধ্যমে ভারত সরকারের কাছে পুনর্বিচারের আবেদন করেন তার বাবা। এরপর শুরু হয় কূটনৈতিক ও বৈদেশিক তৎপরতা। পরে বিজিবি-বিএসএফ এর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ফেলানী হত্যার পুনর্বিচারে রাজি হয় বিএসএফ।

কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এস এম আব্রাহাম লিংকন জানান, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে বিচার কার্যক্রমে অংশ নিতে তারা প্রস্তুতি নিয়েছেন। প্রতিনিধিদলের সদস্যদের ভিসাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করা হয়েছে।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দুই/তিন দিনের মধ্যে ভারতের কুচবিহারের বিএসএফ’র বিশেষ আদালতে পুনরায় ফেলানী হত্যা মামলার কার্যক্রমে তারা অংশ নেবেন।

তিনি আরো বলেন, বিচার কার্যক্রমে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম, মামা আবু হানিফ সাক্ষী দেবেন। এছাড়া  আমি বাংলাদেশের আইনজীবী হিসেবে সাক্ষী ও আদালতকে সহায়তা করব। সার্বিক সহযোগিতা এবং বিচার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে ৪৫ বিজিবি কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোফাজ্জল হোসেন আকন্দও যাচ্ছেন।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর সোয়া ৬টার দিকে কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ীর অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ফেরার পথে মই বেয়ে উঠে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফ এর গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। এরপর তার নিথর দেহ কাঁটাতারের উপর ঝুলে থাকে প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা। পরে বিএসএফ লাশ নামিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে যায়।

এরপর বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে পরদিন (৮ জানুয়ারি) লাশ ফেরত দেয় বিএসএফ।

এ ঘটনায় দেশ-বিদেশের গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো ব্যাপক সমালোচনা করে। ভারতের গণমাধ্যমগুলোর সোচ্ছার ভূমিকায় কুচবিহারের বিএসএফ এর বিশেষ আদালতে ২০১৩ সালের ১৩ অগাস্ট বিচারিক কার্যক্রম শুরু করে ভারত সরকার।

আদালতে সাক্ষ্য দেন প্রত্যক্ষদর্শী  ও ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম ও মামা আব্দুল হানিফ।

কিন্তু অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমীয় ঘোষকে ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বেকসুর খালাস দেয় বিশেষ আদালত। পরে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় ভারতীয় হাই কমিশনারের কাছে আবেদন করে ফেলানীর পরিবার।