ফুলগাজীতে আ. লীগের আলিম চেয়ারম্যান নির্বাচিত

একরামুল হকের মৃত্যুতে শূন্য ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগেরই আবদুল আলিম।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2014, 12:27 PM
Updated : 21 Sept 2014, 12:49 PM

রোববার দিনভর ভোটগ্রহণের পর সন্ধ্যায় দোয়াত-কলম প্রতীকের আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আলিমকে বিজয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহিদুর রহমান।

আলিম পেয়েছেন ৪৭ হাজার ২৬৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত মাহতাব উদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী মিনার আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ২৮৯ ভোট।

আওয়ামী লীগ নেতা একরাম হত্যাকাণ্ডের আসামি মিনার ভোটের কয়েক ঘণ্টা আগে ঢাকায় গ্রেপ্তার হন।

ভোট গ্রহণের মধ্যে রোববার দুপুরে তাকে কারাগারে পাঠানো হলে তার এজেন্ট ও সমর্থকরা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়।

এই উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের আরেক নেতা মোহাম্মদ সেলিম কাপ-পিরিচ প্রতীকে প্রার্থী হয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগ নেতা একরামকে গত ২০ মে ফেনী শহরে প্রকাশ্যে হামলা চালিয়ে গাড়িতে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।

এরপর ফেনী জেলা তাঁতি দলের সভাপতি মিনারকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে জামিনে বেরিয়ে এসে উপনির্বাচনে প্রার্থী হন তিনি।

পরে সর্বোচ্চ আদালত মিনারের জামিন স্থগিত করলে বিচারিক আদালত মিনারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ওই পরোয়ানার ভিত্তিতে তাকে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকার আদালত মিনারকে কারাগারে পাঠানোর পর অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে তার সমর্থকরা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়।

মিনারের ফুলগাজীর বাড়িতে তার পক্ষে প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়কারী ফজলুল হক চৌধুরী সাজু এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন সকাল থেকে প্রত্যেকটি কেন্দ্র দখল করে আমাদের এজেন্টদের বের করে দেয়।”

পশ্চিম বশিকপুর এলাকায় যুবদল নেতা লিটনকে কুপিয়ে আহত করা হয় বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

এছাড়া বন্ধুয়া, সুনীল হাট, ফতেহপুর, পৈথারা, নোয়াপুর, বদরপুর, চকবস্থা, পশ্চিম বশিকপুরসহ অধিকাংশ কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্সভর্তি করার অভিযোগও করেন সাজু।

আনন্দপুর ইউনিয়নের বন্ধুয়া দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি বুথের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নুরুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, তার বুথের ৩৬টি ব্যালট ছিঁড়ে নিয়ে যায় দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকরা।

এ কেন্দ্রে অন্য বুথের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, তার বুথে প্রায় ১৫টি ছেঁড়া ব্যালট পড়ে থাকতে দেখেছেন তিনি।

তবে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা অহিদুল ইসলাম এসব ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন। 

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ এনামুল হক অনিয়মের অভিযোগ নাকচ করে দাবি করেছেন, শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ হয়েছে।

এই উপনির্বাচনের ৩০টি কেন্দ্রের সবকটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ১৯৪টি বুথ ও কেন্দ্রের চারপাশে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত ছিল।

প্রতিটি কেন্দ্রে আনসার, পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি বিজিবি টহল ছিল। এছাড়া প্রতি দুই কেন্দ্রে একজন করে ১৫ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত ছিল।