জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে রোববার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2014, 09:04 AM
Updated : 21 Sept 2014, 09:04 AM

দশ দিনের এই সফরে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তৃতা দেবেন শেখ হাসিনা। ওই দিনই নিউ ইয়র্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তার প্রথম বৈঠক হবে।

এছাড়া বেলারুশের প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিয়াসনিকোভিচ, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসার কথা রয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর। 

শেখ হাসিনা ২৭ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্ক সেন্ট্রাল পার্কে গ্লোবাল পোভার্টি প্রোজেক্ট আয়োজিত ‘বিশ্ব নাগরিক উৎসব’ এও বক্তৃতা করবেন, যা নিয়ে  প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা কাজ করছে।  

নয়জন মন্ত্রী ও উপদেষ্টা ছাড়াও ৭৫ জন ব্যবসায়ী এই সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী হচ্ছেন। ‘বিশিষ্ট ব্যক্তি’, সাংবাদিক ও সরকারের কর্মকর্তাদের নিয়ে এবার প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীর সংখ্যা দেড় শতাধিক।  

রোববার রাত সাড়ে ৮টায় অ্যামিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী।

দুবাইয়ে দুই ঘণ্টা যাত্রাবিরতির পর যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় তার নিউ ইয়র্কে পৌঁছানোর কথা।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার পথে দুই দিন যুক্তরাজ্যে কাটিয়ে ২ অক্টোবর সকালে দেশে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি শুরু হবে ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে, জলবায়ু সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে।

সেদিন রাতেই জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে আসা রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার দেয়া অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।

পরদিন ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের দেয়া অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান ও মধ্যাহ্নভোজে।

এরই মাঝে তিনি বেলারুশের প্রানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং ওইদিন বিকালে শিক্ষা বিষয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় অংশ নেবেন।

২৫ সেপ্টেম্বর কাতারের আমির ও নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও কমনওয়েলথ দেশগুলোর সরকার প্রধানদের সঙ্গে  এক আলোচনা সভায় অংশ নেবেন শেখ হাসিনা।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ পাওয়ার ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২৬ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।  সেদিনই আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কিত এক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন।

২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষমাত্রার অগ্রগতি যাচাই করে ২০১৫ সাল-পরবর্তী নতুন লক্ষ্য নির্ধারণে এবারের অধিবেশনে আলোচনা করবে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো।

২৯ সেপ্টেম্বর সকালে নিউ ইয়র্ক থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন শেখ হাসিনা। ১ অক্টোবর যুক্তরাজ্য থেকে রওনা হয়ে পরদিন সকালে দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

সফরসঙ্গী যারা

মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন অর্থ মন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও খাদ্য মন্ত্রী কামরুল ইসলাম।

প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম ও অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মশউর রহমান ছাড়াও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপু মনি, সদস্য কাজী মোহাম্মদ ফখরুল ও মাহজাবিন খালেদ এই সফরে রয়েছেন।

ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলে থাকছেন এফবিসিসআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, বিজিএমইএ সভাপতি মো. আতিকুল ইসলামসহ ৭৫ জন।

এছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাংসদ নাজমুল হক প্রধান, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, গণতন্ত্রী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) আহ্বায়ক মো. রেজাউর রশীদ খান, গণ আজাদী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস কে শিকদার, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জনকণ্ঠের সম্পাদক আতিকুল্লাহ খান মাসুদ, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কন্ট্রোলার অফ অ্যাকাউন্টস সিদ্দিক হোসেন চৌধুরী, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম এ কামরুল হাসান খান, আওয়ামী লীগের বিভাগীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক মশিউর রহমান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন।

আরো আছেন ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাশার মজুমদার, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রেজাউল করিম রাজু, কক্সবাজারের জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান কানিজ ফাতেমা আহমেদ, ইন্সটিটিউট অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি এ কে এম এ হামিদ, অনিল দাস গুপ্ত এবং মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম আব্দুল মোতালেব।

গণমাধ্যমের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের মধ্যে ইত্তেফাকের নগর সম্পাদক আবুল খায়ের ও জ্যেষ্ঠ উপ-সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, চ্যানেল আইয়ের বার্তা সম্পাদক প্রণব কুমার সাহা, জনকন্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি দেবাশীষ চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, বরিশাল প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাজী আবুল কালাম আজাদ, সময় টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ জোবায়ের, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব আবদুল জলিল ভুইঞা এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আলতাফ মাহমুদও রয়েছেন।