বৃহস্পতিবার সকালে মিরপুরের শিয়ালবাড়ী মোড় থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে মিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কয়েকজন শিবিরকর্মী জড়ো হয়ে গাড়ি ভাংচুর করার সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়। এসময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও দুই শিবিরকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে হরতালের প্রথম দিন সকালে রাজধানীর অন্য কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। হরতালের সমর্থনে কোনো মিছিলও হয়নি।
অন্যান্য সময় হরতালে এই সব এলাকায় মিছিল বের করার নজির রয়েছে জামায়াতকর্মীদের।
এদিকে হরতালে নাশকতা ঠেকাতে রাজধানীতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
রাজধানীতে গণপরিবহনসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলছে। জীবনযাত্রাও স্বাভাবিক রয়েছে।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলে সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় হয় বুধবার। এরপর তার মুক্তি দাবিতে বৃহস্পতি ও রোববার সারা দেশে মোট ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেয় জামায়াতে ইসলামী, যে দলের বিরুদ্ধেও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
জামায়াতের এই হরতালে লঞ্চ ও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে রাজধানী থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ইউনিক পরিবহনের মহাব্যবস্থাপক মো. আব্দুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বুধবার রাত ১০টায় ঢাকা থেকে তাদের শেষ বাসটি ছেড়ে যায়। এরপর আর কোনো বাস ছাড়া হচ্ছে না।
সৌদিয়া পরিবহনের ব্যবস্থাপক বাহার উদ্দিন বলেন, মহাসড়কে নিরাপত্তা ছাড়াও যাত্রীর অভাবেও দূরপাল্লার বাস ছাড়া যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পরিবহন পরিদর্শক (টিআই) সৈয়দ মাহফুজুর রহমান জানান, লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। যাত্রী সংখ্যাও অন্য দিনের মতোই।
ঢাকা রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী সকাল থেকে সব ট্রেন ছেড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার হওয়ায় যাত্রীর উপস্থিতিও বেশ।
হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে সাঈদীর আপিল শুনানির পর বুধবার আপিল বিভাগ সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়।
গত বছর ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর সারা দেশে সহিংস বিক্ষোভে নামে জামায়াতকর্মীরা। তাদের তাণ্ডবে প্রথম তিন দিনেই নিহত হন পুলিশসহ অন্তত ৭০ জন। গাড়ি, বাড়ি এমনকি বিদ্যুৎ কেন্দ্রও পুড়িয়ে দেয়া হয়।