‘রায় আঁতাতের, পরিকল্পিত’

যুদ্ধাপরাধে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় প্রত্যাখ্যান করে গণজাগরণ মঞ্চ বলছে, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আঁতাত করে এই রায় দেয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2014, 04:23 AM
Updated : 17 Sept 2014, 05:31 AM

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নায়েবে আমির সাঈদীর আপিলের রায়ে সাজা কমিয়ে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

বুধবার সকালে আপিল বিভাগ এই রায় ঘোষণার পর বিক্ষোভ ফেটে পড়েন শাহবাগে অবস্থান নিয়ে থাকা গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা।

ওই এলাকায় বিক্ষোভ-মিছিলের পর এক পর্যায়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন তারা।

‘আঁতাতের এই রায় মানি না/প্রহসনের এই রায় মানি না’, ‘আপোসকারীর আস্তানা/জ্বালিয়ে দেও, পুড়িয়ে দাও’ প্রভৃতি স্লোগান দিচ্ছেন তারা।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার পর তার ফাঁসির দাবিতে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে গড়ে উঠে শাহবাগের এই আন্দোলন।
তাদের আন্দোলনের মুখেই আইন সংশোধন করে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষেরও আপিল করার সুযোগ তৈরি হয় এবং কাদের মোল্লার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল নিষ্পত্তির পর গত বছরের ডিসেম্বর তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হয়।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাঈদীর সাজা কমিয়ে দেয়া আপিল বিভাগের রায় প্রত্যাখ্যান করে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, “জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আঁতাত করে এই রায় দেয়া হয়েছে। এটা পরিকল্পিত, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক।”
এই রায়ের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্ম যাতে আন্দোলন করতে না পারে সেজন্য গত এক বছর ধরে গণজাগরণ মঞ্চে বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা চালানো হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এই রায়ের মাধ্যমে ‘ন্যায়বিচার ভুলুণ্ঠিত’ এবং রাজাকারদের ‘পুনর্বাসনের’ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের রায়কে কেন্দ্র করে বুধবার সকালে রাজধানীর শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের অবস্থান। ছবি: নয়ন কুমার/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

ইমরান বলেন, “সাঈদী চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এই রায়ে গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি, ন্যায়বিচার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, জনগণ এ রায় মেনে নেবে না।”
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের ন্যায়বিচার চাইলে আবারো শাহবাগের আন্দোলনে যোগ দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান ইমরান।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাঈদীর বিচার শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর। ট্রাইব্যুনালে রায় হয় ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, যাতে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।