আপিলের রায় পুনর্বিবেচনা: অস্পষ্টতা ‘কাটেনি’

যুদ্ধাপরাধ মামলায় আপিলের রায় পুনর্বিবেচনার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে একটি রায়ের পূর্ণ অনুলিপি প্রকাশিত না হওয়ায় এ বিষয়ে অস্পষ্টতা কাটেনি নয় মাসেও।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Sept 2014, 10:03 PM
Updated : 16 Sept 2014, 10:03 PM

ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মুত্যুদণ্ড পাওয়া যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় আপিলের রায়ের পর তা পুনর্বিবেচনার সুযোগ থাকবে কি না- সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, গতবছর ডিসেম্বরে পুনর্বিবেচনা সংক্রান্ত কাদের মোল্লার একটি আবেদন আপিল বিভাগ খারিজ করে। ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি এখনো প্রকাশিত হয়নি।

“ওই রায় প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না।”

আপিল বিভাগ ‘মিরপুরের কসাই’ খ্যাত জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে সর্বোচ্চ সাজা দিলে তার আইনজীবী পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) পাশাপাশি দণ্ড কমানোর জন্য আবেদন করেন। সেই আবেদন গত বছর ১২ ডিসেম্বর খারিজ হয়ে যায়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার ওই মামলার রায় ঘোষণা করে গত বছর ৫ ফেব্রুয়ারি, যাতে যাবজ্জীবন সাজার রায় এলে সারা দেশে শুরু হয় ছাত্র-জনতার আন্দোলন। 

এরপর আইন সংশোধন করে উভয় পক্ষের আপিলের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। আপিল বিভাগ গত ১৭ সেপ্টেম্বর সাজা বাড়িয়ে কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ দেয়।

এর আড়াই মাসের মাথায় পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে সরকারের পক্ষ থেকে ১০ ডিসেম্বর মধ্যরাতে দণ্ড কার্যকরের উদ্যোগ নেয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে কাদের মোল্লার সঙ্গে দেখাও করে আসেন।

কিন্তু আসামিপক্ষের আবেদনে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ওইদিন রাতে এক আকস্মিক আদেশে ফাঁসি কার্যকর স্থগিত করে দেন। ওই রাতেই কাদের মোল্লার পক্ষে পুনর্বিবেচনার আবেদন দাখিল করেন তার আইনজীবীরা।

এই পরিস্থিতিতে ১১ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার রিভিউ আবেদনের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। পরে ১২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের আদেশের মধ্যে দিয়ে ওই স্থগিতাদেশ উঠে যায়।

ওইদিন কাদের মোল্লার আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক তার আবেদনের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন। পরে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন তাকে মূল আবেদনের শুনানি (অন মেরিট) শুরু করতে বলেন।

ব্যারিস্টার রাজ্জাক তখন বলেন, “রিভিউয়ের গ্রহণযোগ্যতার (মেনটেইনেবল কি-না) বিষয়ে আদালত এখনো কোনো আদেশ দেয়নি। তার আগেই মূল রিভিউয়ের শুনানি কীভাবে হবে?”

এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, “রিভিউ মেনটেইনেবল না- এটা আমরা বলছি না। আপনি যদি বলেন এটা ‘মেনটেইনেবল’, সে বিষয়েও কোনো তর্কে যাচ্ছি না। আপনাকে অন মেরিট শুনানির সুযোগ দিচ্ছি। আপনি গ্রাউন্ড বলেন।”

এরপর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) বিষয়ে যুক্তি দিতে শুরু করেন কাদের মোল্লার আইনজীবী।

তার বক্তব্য শুনে আপিল বিভাগ ওইদিনই আবেদনটি খারিজ করে দেয়। ১২ ডিসেম্বর রাতে কার্যকর করা হয় ফাঁসির দণ্ড।

আপিল বিভাগের সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হওয়ার আগে পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলা সম্ভব নয় বলেই মনে করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।