কিবরিয়া হত্যা: দেলোয়ারকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ

সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় আটক মুফতি হান্নানকে এক দিনের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।

হবিগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Sept 2014, 12:36 PM
Updated : 16 Sept 2014, 12:36 PM

এছাড়া এ মামলায় আরেক হুজি নেতা দেলোয়ার হোসেন রিপনকে গ্রেপ্তার দেখাতেও আদেশ দেয়া হয়।  

মঙ্গলবার হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারকি হাকিম রোকেয়া আক্তার এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি মেহেরুন নেছা জানান, দুপুরে দেলোয়ারকে আদালতে হাজির করে গ্রেপ্তার দেখানোর এবং তদন্তের স্বার্থে মুফতি হান্নানকে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে এ আদেশ দেওয়া হয়।  

হুজি নেতা দেলোয়ার হোসেন রিপন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলর হিংঙ্গাউড়া গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে।

এএসপি মেহেরুন নেছা সাংবাদিকদের জানান, শিগগিরই এ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হবে, তদন্ত কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

এটি একটি স্পর্শকাতর মামলা। তদন্তের আগেই কিছুই বলা যাবে না।

তিনি আরো জানান, তদন্তে নতুন করে অনেকের নাম আসতে পারে, আবার নাও আসতে পারে, সেটা তদন্তের পর বলা যাবে।

মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটু জানান, কারাগারে আটক মুফতি হান্নানকে জেল গেটে এক দিনের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদেশ দিয়েছে আদালত। সেইসঙ্গে অপর হুজি নেতা দেলোয়ার হোসেন রিপনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ হয়েছে।

অপর হুজি নেতা ফরিদ আহমেদ অরফে শওকত আদালতে হাজির না হওয়ার তার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি।

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যের বাজারে ঈদ পরবর্তী এক জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় শিকার হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

ওই হামলায় আরো নিহত হন কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী।

আহত হন শতাধিক নেতাকর্মী।

ওই রাতেই হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (বর্তমান) আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।

প্রথমে সিআইডির এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান মামলাটি তদন্ত করে ১০ জনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২০ মার্চ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এরপর মামলার বাদী আবদুল মজিদ খান ২০০৬ সালের ৩ মে সিলেট দ্রুত বিচার আদালতে নারাজি আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে। এরপর ১৪ মে তিনি হাই কোর্টে আপিল করেন। আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট ‘কেন অধিকতর তদন্ত করা যাবে না’ মর্মে রুল জারি করে। এই রুলের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের ১৮ মে লিভ টু আপিল করে সরকার। আপিল বিভাগ সরকারের আপিল খারিজ করে।

এরপর ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মামলার অধিকতর তদন্ত শুরু হয়, যার দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামকে।

তিনি ২০১১ সালের ২০ জুন আরও ১৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

ওই অভিযোগপত্রে জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, মুফতি হান্নানকেও আসামি করা হয়।  

কিন্তু এরপর আবার ২০১১ সালের ২৮ জুন কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া অভিযোগপত্রে হবিগঞ্জের বিচারিক আদালতে নারাজি আবেদন করেন।

২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি নারাজি আবেদন গ্রহণ করেন সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক।

এরপর মামলাটি তৃতীয়বারের মতো অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির এএসপি মেহেরুন নেছা।