জজ মিয়াকে বাড়ি দেওয়ার ‘লোভও দেখানো হয়’

একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে জজ মিয়াকে পাঁচ কাঠা জমিতে বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার প্রলোভনও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন তার মা জোবেদা খাতুন।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Sept 2014, 02:43 PM
Updated : 23 Sept 2014, 03:02 PM

আলোচিত এই মামলায় জবানবন্দি দেওয়ার পর সোমবার ঢাকার ১ নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে আসামি পক্ষের জেরার এক পর্যায়ে এই কথা বলেন তিনি।

নাজিম উদ্দিন রোডে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে এই আদালতের বিশেষ এজলাসে গত ৮ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য দেওয়ার পর জোবেদাকে জেরা শুরু করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।

১০ সেপ্টেম্বর দিনভর তাকে জেরার পর সোমবারও তাকে জেরা শেষ করতে পারেননি আইনজীবীরা। বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন সাক্ষী জোবেদাকে জেরা করতে মঙ্গলবার আবার দিন রেখেছেন।

এ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি আবু আবদুল্লাহ ভূইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জজ মিয়া ও তার বোন খোরশেদা এজলাসে হাজির হলেও জোবেদাকে জেরা শেষ না হওয়ায় তারা এদিনও সাক্ষ্য দিতে পারেননি।

জবানবন্দিতে জোবেদা বলেছিলেন, জজ মিয়ার মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার পুরস্কার হিসেবে তাকে প্রতি মাসে মাসে ২ হাজার টাকা করে দিতেন সিআইডির দুই কর্মকর্তা।

গত ৮ সেপ্টেম্বর আদালতে জোবেদা খাতুন

সাবেক সিআইডি কর্মকর্তা রুহুল আমিন ও আব্দুর রশিদ এই অর্থ দিতেন বলে দাবি করেন তিনি। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে মামলার এই দুই তদন্ত কর্মকর্তা বর্তমানে এই মামলারই আসামি।   

এই দুই পুলিশ কর্মকর্তার আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার সাক্ষী জোবেদাকে বলেন, “আপনি যে বলেছেন, সিআইডি আপনাকে মাসে মাসে দুই হাজার টাকা করে দিত, সেকথা সত্য নয়।”

তখন জোবেদা বলেন, “শুধু দুই হাজার টাকা করে দিত, তা-ই নয়। তারা আমাকে ৫ কাঠা জমির ওপর একটি বাড়ি করেও দিতে চেয়েছিল।”

২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে সেই হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পরের বছর ৯ জুন নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বিরকোট গ্রাম থেকে জজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। ‘স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি’ আদায়ের পর জজ মিয়াকে আসামি করেই চাঞ্চল্যকর এ মামলার অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

কিন্তু পরে অধিকতর তদন্তে দেখা যায়, ওই মামলাকে ‘ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য’ বিগত চারদলীয় জোট সরকারের নির্দেশে সিআইডি জজ মিয়াকে নিয়ে নাটক সাজানোর চেষ্টা করে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৮ সালে জজ মিয়াকে আসামি থেকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। পরে আদালত তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিলে ২০০৯ সালে মুক্তি পান জজ মিয়া।

আদালতের নির্দেশে ২০১১ সালের ৩ জুলাই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ৩০ জনকে আসামির তালিকায় যোগ করে এ মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। তাতে জজ মিয়া ও তার মা-বোনকে সাক্ষী করা হয়।