বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার প্রসিকিউশনের দেয়া অভিযোগ আমলে নিয়ে এ আদেশ দেয়।
আসামি আব্দুল লতিফ তালুকদারের পক্ষে জামিন আবেদন করা হলেও এদিন তা খারিজ করে দিয়েছেন বিচারক।
এছাড়া সিরাজ মাস্টারের পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রীয় খরচে আবুল আসাদকে আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউটর সায়্যেদুল হক সুমন ও শেখ মুশফিক কবির রোববার ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে এই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।
সায়্যেদুল হক সুমন সে সময় সাংবাদিকদের বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় বাগেরহাটে হত্যা, গণহত্যা, লুণ্ঠণ ও ধর্মান্তরিতকরণসহ মোট আটটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে তিন আসামির বিরুদ্ধে।
এর মধ্যে সিরাজ মাষ্টারের বিরুদ্ধে ছয়টি এবং আব্দুল লতিফ ও খান আকরামের বিরুদ্ধে চারটি করে অভিযোগ রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাগেরহাটের কচুয়ার শাঁখারীকাঠি বাজারে ৪২ জনকে গণহত্যা, ধর্ষণ ও বাড়িতে অগ্নিসংযোসহ ছয়টি অভিযোগে ২০০৯ সালে সিরাজ মাস্টারসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।
ওই গণহত্যায় নিহত রঘুদত্তকাঠি গ্রামের শহীদ জিতেন্দ্র নাথ দাসের ছেলে নিমাই চন্দ্র দাস কচুয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি পরে ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-১ গত ১০ জুন এই তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে কচুয়া থানা পুলিশ গত ১১ জুন লতিফ তালুকদারকে গ্রেপ্তার করে।এরপর ১৯ জুন আকরাম হোসেন খানকে গ্রেপ্তার করা হয় রাজশাহী থেকে। ২০ জুলাই গ্রেপ্তার হন সিরাজ মাস্টার।
প্রসিকিউশনের তদন্ত দল দীর্ঘ তদন্ত শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।
প্রসিকিউশনের তদন্ত সংস্থা বলছে, মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে আসামিরা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করতে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেয়।
খুলনার আনসার ক্যাম্পে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে অস্ত্র ও গুলি সংগ্রহ করে তারা অন্যান্য রাজাকার সদস্যদের সঙ্গে বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্মান্তরিতকরণসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধ চালায় বলে তদন্ত সংস্থার অভিযোগ।