রেল লাইনে বেষ্টনি দেওয়ার সুপারিশ

অবৈধ বাজার উচ্ছেদের পর তা যেন পুনরায় বসতে না পারে, সেজন্য রেল লাইনের দুই পাশে বেষ্টনি দেওয়ার সুপারিশ এসেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Sept 2014, 12:18 PM
Updated : 14 Sept 2014, 01:07 PM

ঢাকায় রেল লাইনে বসা অবৈধ বাজারে ট্রেনে কাটা পড়ে চারজন নিহত হওয়ার পর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চলার মধ্যে রোববার রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি এই সুপারিশ করেছে।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে চার ব্যক্তি নিহত হওয়ার পরদিন থেকে শুরু হওয়া উচ্ছেদ অভিযান রোববারও চলছিল।

এর মধ্যেই সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি আলোচনায় ওঠে, যাতে রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হকও ছিলেন।  

বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ঢাকা মহানগরী ও আশেপাশের এলাকায় জালের বেড়া দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য স্থানেও এই কার্যক্রম হাতে নিতে বলেছে কমিটি।

“রেলমন্ত্রী কমিটিকে জানিয়েছেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চালু থাকবে। কিন্তু দেখা যায়, উচ্ছেদের পরপরই আবার বাজার বসছে। এজন্যই কমিটি বেড়া নির্মাণের সুপারিশ করেছে।”

রেল কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, গত ৯ মাসে শুধু ঢাকাতেই ট্রেনের নিচে পড়ে ২৩৮ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ১৯২ জন পুরুষ এবং ৪৬ জন নারী।

তবে এর মধ্যে আত্মহত্যার কয়েকটি ঘটনা রয়েছে। কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে লেভেল ক্রসিংয়ে গাড়ির সঙ্গে ট্রেনের সংঘর্ষে।

বিদ্যুৎ-মেরামতের খরচ কমানোর সুপারিশ

সংসদীয় কমিটি রেলের মেরামত ও বিদ্যুৎ বিল কমানোর সুপারিশ করেছে। তবে রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের বিদ্যুৎ বিল ‘যৌক্তিক’।

সংসদীয় কমিটিতে রেল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে রেলওয়ের রাজস্ব খাতে বরাদ্দ এক হাজার ৯৪৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

এর মধ্যে মেরামত বাবদ খরচ ৫৮৬ কোটি ৮৬ লাখ ৮০ হাজার, জ্বালানি তেল বাবদ খরচ ২৭০ কোটি এবং বিদ্যুৎ বিল বাবদ খরচ হবে ৭০ কোটি টাকা।আর পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮০ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি ফজলে করিম বলেন, “বিদ্যুৎ বিল নিয়ে রেল বলেছে তাদের খরচ যৌক্তিক। তবে এর আগেও সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অবৈধ বিদ্যুৎ বিল সংযোগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কমিটি অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বিল কমানোর সুপারিশ করেছে।”

রেলের মেরামত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যারা স্টিলের ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করে তারা রেলেরও মেরামত করে। যারা প্রকৃত কাজ করে তাদের দিয়ে মেরামত করালে খরচ কম হবে। এজন্য মেরামত কাজে পারদর্শী এমন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে।”

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে রেলওয়ের সরকারি বাসাগুলোকে পর্যায়ক্রমে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে বহুতল ভবন নির্মাণের সুপারিশ করা হয়। স্টেশন মাস্টার নেই এমন স্টেশনগুলোতে দ্রুত নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশও করা হয়।

ফজলে করিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে রেলমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন কমিটির সদস্য মো. আলী আজগর, মিজানুর রহমান, মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ও ইয়াসিন আলী অংশ নেন।