মমতাই এখন বসতে চান আবিদার সঙ্গে

কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার আবিদা ইসলামের সঙ্গে বসতে চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কলকাতা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Sept 2014, 06:16 AM
Updated : 14 Sept 2014, 07:20 AM

এর আগে প্রায় দুই বছর ডেপুটি হাই কমিশনার তার সাক্ষাৎ চাইলেও সময় দেয়া হয়নি মুখ্যমন্ত্রীর। সম্প্রতি সারদা কেলেঙ্কারি এবং এক তৃণমূল নেতার জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠার পর এ বৈঠকে সম্মতি দিলেন মমতা।

সোমবারই তাদের সাক্ষাৎ হতে পারে বলে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করে এক কর্মকর্তা বলেন, “রাজনাথ সিং (কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) তৃণমূলের এক নেতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরিতে জামায়াতে ইসলামীকে অর্থ দেয়ার অভিযোগ তদন্ত চলার ইঙ্গিত দেয়ার পর বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন মমতা।

“ঢাকা থেকে বিষয়টি তোলার পর ভারত সরকার তা তদন্ত করছে বলে খবর প্রকাশ হওয়ায় ডেপুটি হাই কমিশনারের কাছে এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের মনোভাব জানতে চাইতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।”

এদিকে বাংলাদেশি কয়েকটি সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, তৃণমূল সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরানের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্ক নিয়ে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অবস্থান জানাতে ডেপুটি হাই কমিশনারকে তলব করেছেন মমতা।

তবে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর ও বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশন সূত্র জানায়, বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার মমতার সাক্ষাৎ চাওয়ায় তাদের এই বৈঠক হচ্ছে।

গত জুলাইয়ে ভারতে দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হয়েছে আবিদা ইসলামের। চলতি মাসের শেষ দিকে তিনি ঢাকা ফিরবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তৃণমূলের কয়েক নেতা জানান, আবিদা ইসলাম আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎ চাইলে দুই বছরেও বাংলাদেশি কূটনীতিকের সঙ্গে দেখা করেননি মুখ্যমন্ত্রী।

“দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ও স্থল সীমান্ত চুক্তির মতো বিষয়গুলো  থাকায় বাংলাদেশি কূটনীতিকের সঙ্গে বৈঠক এড়ানোর চেষ্টা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী,” বলেন রাজ্য সরকারের এক কর্মকর্তা।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সই এবং স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলেও তার বিরোধিতা করেন মমতা।

কেউ কেউ বলছেন, মমতা এমন সময়ে বাংলাদেশি কূটনীতিকের সঙ্গে বসতে সম্মত হয়েছেন যখন জামায়াতের সঙ্গে তার দলের নেতা ইমরানের সম্পর্ক নিয়ে সীমান্তের উভয় পাশে আলোচনা চলছে।

সম্প্রতি বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সিদ্ধার্থ নাথ সিং এক নির্বাচনী সভায় সাবেক সিমি নেতা ইমরানের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্কের বিষয়টি তুললে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।

ভারতে ২০০১ সাল থেকে নিষিদ্ধ স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়ার (সিমি) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ইমরান বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার সদস্য।

বাংলাদেশ ও ভারতের কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের বরাত দিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা সিদ্ধার্থ বলেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে জ্বালাও-পোড়াওয়ে সারদার টাকা পাঠিয়েছেন ইমরান।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সোমবার ভারতীয় টেলিগ্রাফকে ইমরান বলেছেন, “১৯৮৪ সালে আমি সিমি ছেড়েছি এবং জামায়াতের সঙ্গে আমার কিছু করার নেই।”

সুব্রত মুখার্জি ও ফিরহাদ হাকিমের মতো তৃণমূল নেতারাও ইমরানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নাকচ করছেন। সোমবার অনুষ্ঠানরত উপনির্বাচন ঘিরে ভোটারদের মন ঘোরাতে বিজেপি কৌশল হিসেবে ইমরানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলেছে বলে দাবি তাদের।

“ইমরান সন্ত্রাসী নয়। শুধু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে আসায় তাকে টার্গেট করা হচ্ছে,” শনিবার তৃণমূল ভবনে বলেন হাকিম।