তবে নিহত তারেকের পরিবারের অভিযোগ, তিনি এক মাস আগেও আদমজীর একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। ভোর রাতে ধনিয়ার বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে ‘ধরে নিয়ে যায়’।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান জানান, গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল রোববার সকালে তারেককে গ্রেপ্তার করে মুগদা গ্রিন মডেল টাউন এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারে গেলে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
তিনি জানান, ভোরে তারেককে গ্রেপ্তার করার পর তাকে নিয়ে ‘অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের জন্য’ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ।
“মুগদা এলাকায় গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গোলাগুলির মধ্যে তারেক গুলিবিদ্ধ হয়।”
আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা বেলা ১১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে মাসুদুর রহমান জানান।
ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, দুটি গুলি এবং একটি করে চাপাতি ও ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গোলাগুলির সময় গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মন ও এএসআই আক্তারুজ্জামান জখম হয়েছেন।
মহানগর পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তারেক কদমতলী ও মাতুয়াইল এলাকার ‘সন্ত্রাসী ও অস্ত্র ব্যবসায়ী’ চান্দি সুমন ও কিলার শামিম গ্রুপের সদস্য। তাদের ছত্রছায়ায় সে কদমতলী ও মাতুয়াইল এলাকায় ‘অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা ও চাঁদাবাজি’ চালিয়ে আসছিল।
তবে তারেকের নামে থানায় কোনো মামলা আছে কি না- সে বিষয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কিছু বলা হয়নি।
সারাদিন ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে লাশ পড়ে থাকার পর রাত ৮টার দিকে এসে মরদেহ সনাক্ত করেন তারেকের বাবা আবু জাফর শিকদার। ধনিয়া এলাকায় ‘আবু দাউদ’ নামে তার একটি ফার্মেসি আছে।
আবু জাফর সাংবাদিকদের বলেন, তারেক এক মাস আগেও আদমজীর একটি গার্মেন্টে কাজ করত। সেই চাকরি ছাড়ার পর মাঝে মধ্যে ফার্মেসিতে বসত।
তারেক মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন বলেও তার বাবা জানান।
“আমার ছেলের নামে থানায় কোনো মামলা বা জিডি নেই। তারপরও ভোরবেলা তাকে ধরে নিয়ে গেল। যাওয়ার সময় তারেক শুধু বলল- ‘বাবা আমি ষড়যন্ত্রের শিকার’।”
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আবু জাফর বলেন, “সারাদিন ছেলের জন্য গোয়েন্দা অফিসের সামনে ছিলাম। কিন্তু স্পষ্ট করে কেউ কিছু বলেনি। সন্ধ্যায় কয়েকজন মর্গে খোঁজ নিতে বলল।”
তিন ভাইয়ের মধ্যে তারেক ছিলেন সবার বড় ছিল। তাদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায়।