ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় শনিবার এক প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে উদ্ধৃত করে এ কথা বলা হয়।
আহমেদ হাসান ইমরান দীর্ঘদিন নিষিদ্ধ মৌলবাদী সংগঠন স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়ার (সিমি) পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি ছিলেন। ২০০১ সালে সিমিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ হন তিনি।
ইমরানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজনাথ সিং বলেন, “তদন্ত চলছে। আইন আইনের পথেই চলবে। এতে আমরা কোনও হস্তক্ষেপ করব না।”
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইমরানের ‘সন্দেহজনক’ ভূমিকা নিয়ে রাজ্যের গোয়েন্দা, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি বাংলাদেশি গোয়েন্দা সংস্থা সংশ্লিষ্ট মহলে যে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল, তারও প্রমাণ ইতোমধ্যে মিলেছে।
অবশ্য তৃণমূল বলছে, ইমরান সংখ্যালঘু বলেই তাকে জড়িয়ে ‘অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ বিষয়টির বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যাননি।
তবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অনুমান, এই ধরনের কাজে ইমরানের মত প্রাক্তন সিমি নেতারাও জড়িত।
এতে আরও বলা হয়েছে, “কেন্দ্রের গুরুতর জালিয়াতি তদন্ত সংস্থা বা এসএফআইও তাদের রিপোর্টে সম্প্রতি জানিয়েছে, সারদা গোষ্ঠীর টাকার একটি বড় অংশ আমেরিকা ও পশ্চিম এশিয়ায় পাচার হয়ে গিয়েছে। হাওয়ালার (হুন্ডি) মাধ্যমে বাংলাদেশ হয়ে ওই টাকা পাচার হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্র।
“ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাচার হওয়া টাকার একটি অংশ তিনি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর তহবিলে। সেই টাকা বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।”
যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় ঘোষণা হওয়ার পর ধর্মতলায় যেসব সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়েছিল জামায়াত ও সিমির মদতেই ওই কাজ হয়েছিল এবং তাতে ইমরানের সক্রিয় ভূমিকা ছিল বলেও আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
ওই সব অভিযোগের পক্ষে তথ্যপ্রমাণ হাজির করার জন্য সংবাদমাধ্যমকে চ্যালেঞ্জও করেন সুব্রত। না হলে তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি তার অভিযোগ, “এর পিছনে বিজেপি রয়েছে। তারা প্রাদেশিকতা, সংঘর্ষ ছড়াতে চাইছে।”
সুব্রত বলেছেন, “তদন্ত হবে বলেছেন। তদন্তে কিছু প্রমাণিত হলে নিশ্চয়ই সাজা পাবে। কিন্তু তার আগেই ইমরানকে অপরাধী বানানো হবে কেন?”
অন্যদিকে তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম ববির দাবি, “সংখ্যালঘু বলেই ইমরানকে জড়িয়ে এ সব প্রচার হচ্ছে। তৃণমূল তাকে সাংসদ করেছে, এই অপরাধে বিজেপি সাধারণ ঘরের এক সংখ্যালঘু মানুষকে কালিমালিপ্ত করছে।”
এর জবাবে রাজ্যে বিজেপির পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিং বলেন, “ওরা আদালতে গেলে ভালই হয়। আমি ওদের আদালতে স্বাগত জানাচ্ছি। সংখ্যালঘু বলে ইমরানকে আক্রমণ করার প্রশ্নই নেই। তিনি দেশদ্রোহিতায় যুক্ত। তাই তার সমালোচনা করা হচ্ছে।”
শুক্রবার আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২-১৩ সালে ইমরানের মাধ্যমে ভারত থেকে দফায় দফায় বিপুল পরিমাণ অর্থ পৌঁছে জামায়াতে ইসলামী ও তাদের নানা শাখা সংগঠনের হাতে।
বাংলাদেশের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ইমরানের মাধ্যমে অর্থের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরকের বেশ কয়েকটি চালানও ভারত থেকে জামায়াতের হাতে দেওয়া হয়েছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা করা হয়।