সোমবার রাতে স্ত্রী রোখসানা পারভীনকে হত্যার পর রব নিজের মাথায় গুলি চালিয়েছিলেন বলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ধারণা।
নিহত দম্পতির পরিবারও এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে অন্য কাউকে সন্দেহ করছে না। তাদের ছেলে নাফিস আহমেদ মঙ্গলবার ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার কুদরাত-ই খুদা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রোখসানার বুকে একটি ও পিঠে দুটি গুলির চিহ্ন রয়েছে আর আব্দুর রবের মাথার ডান পাশে একটি গুলির চিহ্ন রয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, রোখসানার লাশটি বিছানায় উপুড় হয়ে পড়ে ছিল, পাশেই মেঝেতে ছিল তার স্বামীর লাশ। রবের মাথার ডান পাশে গুলির চিহ্ন ছিল। অস্ত্রটি পড়েছিল তার ডান পায়ের কাছেই।
পিস্তলটি ব্যবসায়ী রবের লাইসেন্স করা বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। তবে দুজন ওই পিস্তলের গুলিতে নিহত হয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত হতে সময় লাগবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ক্যান্টনম্যান্ট থানার ওসি মো. আতিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই পিস্তলে আরো সাতটি গুলি পাওয়া গেছে।
“সিআইডি ‘ব্যালাসটিক’ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হবে যে এই পিস্তলটি ব্যবহার করা হয়েছে কি না, সেই সঙ্গে পিস্তলে হাতের ছাপের পরীক্ষায়ও করা হবে।”
নাফিস সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ব্যবসায় ধসের কারণে তার বাবা হতাশায় ভুগছিলেন। তাছাড়া ঋণের কারণে নানা দিক থেকে চাপও আসছিল। এসব নিয়ে পরিবারে অশান্তি ছিল।
নাফিস আহমেদ বাদী হয়ে অপমৃত্যু মামলা করেন বলে ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসি জানান।
তবে ময়নাতদন্ত এবং সিআইডির পরীক্ষার ফলাফল দেখে মামলার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তা কুদরাত বলেন, “যদি ওই কক্ষে তৃতীয় কারো উপস্থিতি বা অসঙ্গতিপূর্ণ কিছু পাওয়া যায়, তাহলে এই অপমৃত্যু মামলাটি হত্যামামলা হিসেবে ধরা হবে।”
নিহত রব (৫৩) ও রোখসানা (৪৯) কে মঙ্গলবার বিকালে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয় বলে তাদের বড় ছেলে নাজিব আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
সোমবার রাতে রাজধানীর বনানী ডিওএইচএসের একটি বাড়ি থেকে আব্দুর রব (৫৩) ও তার স্ত্রী রোখসানা পারভীনের (৪৯) গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
দাফনের আগে এই দম্পতির ময়নাতদন্ত হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তবে ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী আবু সামাদ ময়নাতদন্তের ফলাফলের বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।
রবের বাড়ি কেরানীগঞ্জের কলাতিয়া ইউনিয়নে। ওল্ড ডিওএইচএসের ৫ নম্বর রোডের ৬০/এ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে নয় বছরের এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন তারা। তাদের তিন ছেলে আলাদা থাকেন।