হোটেল-রেস্তোরাঁ এবং পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ বিল সংসদে

নিবন্ধনের শর্ত ভঙ্গে শাস্তির মাত্রা বাড়ানোর প্রস্তাব রেখে ‘বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোরাঁ বিল’ সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2014, 01:31 PM
Updated : 2 Sept 2014, 01:32 PM

এছাড়া বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগে যোগ্যতা শিথিল করে সংসদে তোলা হয়েছে ‘পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) বিল’।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোরাঁ বিল-২০১৪’ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেন।

সেটি পরীক্ষা করে এক মাসের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

আর ‘পরমানু শক্তি নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) বিল-২০১৪’ উত্থাপন করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে বিলটি পরীক্ষা করে পাঁচ দিনের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

‘হোটেল ও রেস্তোরাঁ বিল’

১৯৮২ সালে জারি হওয়া সামরিক অধ্যাদেশ পরিমার্জন ও সংশোধন করে নতুন আইন করতে এই বিলটি সংসদে তোলা হয়েছে।

প্রস্তাবটি আইনে পরিণত হলে হোটেল-রেস্তোরাঁয় পানীয় ও খাবারের রাসায়নিক পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে। থ্রি-স্টার বা তার চেয়ে উঁচু মানের হোটেল করতে হলে সরকারের অনাপত্তিপত্র লাগবে।

এই বিলে প্রতিবছর হোটেল-রেস্তোরাঁর লাইসেন্স নবায়ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হোটেল-রোস্তোরাঁর নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করবেন জেলা প্রশাসক বা সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

ভোক্তা বা সেবাগ্রহীতারা সেবা ও মান নিয়ে নিয়ন্ত্রকের কাছে অভিযোগ করতে পারবেন। নিয়ন্ত্রক সংক্ষিপ্ত তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

এ আইন ভঙ্গের জন্য শাস্তির পরিমাণও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

বর্তমান আইনে অনধিক ৫ হাজার টাকার জরিমানার বিধান থাকলেও বিলে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ২ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ ব্যাখ্যা করে রাশেদ খান মেনন বলেন, “বাংলাদেশে পর্যটকদের অবস্থান ও সেবা নিশ্চিত করার জন্য হোটেল ও রেস্তোরাঁর সংখ্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব হোটেল ও রেস্তোরাঁর  সেবা ও সুযোগ-সবিধার মান নিশ্চিত করার জন্য পুরনো অধ্যাদেশটি পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।”

পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ বিল

এ বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে ইয়াফেস ওসমান সংসদে বলেন, “বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের যোগ্যতার পরিধি সীমিত থাকায় অতি গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে যোগ্য ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি নিয়োগ করা কঠিন হচ্ছে।”

বর্তমান আইনে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নিয়োগে পদার্থ বা ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বা ফলিত রসায়ন, মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বা নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং, ভৌত বিজ্ঞানে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর বা উচ্চ ডিগ্রীধারীদের অগ্রাধিকার এবং নিউক্লিয় নিরাপত্তা ও বিকিরণ সুরক্ষায় ১৫ বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও নিয়ন্ত্রণমূলক কাজের ক্ষেত্রে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, পরমাণু শক্তি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে চেয়ারম্যান ও সদস্যরা নিযুক্ত হবেন।

“তবে শর্ত থাকে যে, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সঞ্চালন বিষয়ে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে একজন সদস্য নিয়োগ করা যাবে।”

আইনটি কার্যকর হলে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি নিয়োগ সহজতর হবে বলেও প্রতিমন্ত্রী জানান।