জিয়াকে বিতর্কিত করতে মুজিব হত্যায় জড়ানোর চেষ্টা: তারেক

বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে কোনোভাবেই জিয়ার ভূমিকা খাটো করতে ব্যর্থ হয়ে এখন তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডে জড়ানোর চেষ্টা চলছে।

সৈয়দ নাহাস পাশাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2014, 04:26 AM
Updated : 2 Sept 2014, 04:26 AM

তার বাবা জিয়াউর রহমানই প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন বলেও ফের দাবি করেন তিনি।

দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সোমবার ইস্ট লন্ডনের অট্রিয়াম ব্যাংকোয়েট হলে যুক্তরাজ্য বিএনপি এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

ওই অনুষ্ঠানেই একথা বলেন জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সপরিবারে শেখ মুজিবকে হত্যায় জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততার অভিযোগ করে আসছে আওয়ামী লীগ।

সম্প্রতি এক আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীত ধারায় পরিচালিত করার ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে তার সঙ্গে জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততার অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হলেও জিয়া ক্ষমতা দখল করে তা বন্ধ করে দেয়।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়ার সম্পৃক্ততার প্রমাণ হিসেবে আত্মস্বীকৃত খুনি ফারুক রহমান এবং আব্দুর রশীদের বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারের কথা তুলে ধরেন হাসিনা।

আলোচনায় নিজের বাবাকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে অভিহিত করে তারেক বলেন, “তিনিই প্রথম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

“রাজনৈতিক নেতৃত্ব ব্যর্থ হলেও শহীদ জিয়া যুদ্ধের ডাক দিতে এবং স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে সময় নষ্ট করেননি।”

আর জিয়ার এই ভূমিকাকে খাটো করতে না পেরে তাকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়ানোর চেষ্টা চলছে বলে দাবি করেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, “যুদ্ধের, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে কোনোভাবেই শহীদ জিয়ার ভূমিকাকে খাটো করতে ব্যর্থ হয়ে এখন তারা শহীদ জিয়াকে বিতর্কিত করতে শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডে শহীদ জিয়ার নাম জড়াতে চায়।”

তারেক রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে ভূমিকা রাখা ব্যক্তিরা এখন শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় রয়েছ্নে।

“এই সব লোকেরাই শেখ হাসিনার কাছে নিজেদের বাঁচাতে মিথ্যাচার শুরু করেছে।”

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু পরিবারকে ‘জাতির জন্য অভিশাপ’ বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তারেক।

শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও কয়েস আহমেদের পরিচালনায় ওই আলোচনা সভায় বিএনপির ৫০০ শতাধিক নেতা-কর্মী-সমর্থক অংশ নেন, যার ব্যানারে প্রধান অতিথি তারেককে ‘দেশনায়ক’ বলা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা পর্বের আগে বিএনপি পরিচালনায় জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের অবদান তুলে ধরে পলিসি ফোরাম নির্মিত একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়।

জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে মুক্তির পর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান তারেক।

২১ অগাস্টসহ বিভিন্ন মামলা মাথায় নিয়ে লন্ডনে থাকা তারেক প্রবাসে বিএনপির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। লন্ডন থেকে মালয়েশিয়া গিয়ে একটি সভায়ও যোগ দেন তিনি। গত জুলাইয়ে সস্ত্রীক সৌদি আরব গিয়ে মায়ের সঙ্গে ওমরাহও পালন করেন তিনি।

সর্বশেষ গত ২৫ অগাস্ট লন্ডনে এক সভায় বক্তব্যে শেখ মুজিব পরিবারকে ‘অভিশাপ’ এবং আওয়ামী লীগকে ‘কুলাঙ্গারের দল’ বলেন তিনি।   

কয়েক মাস আগে আরেক সভায় নিজের বাবা জিয়াউর রহমানকে ‘বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি’ বলে দাবি করেন তারেক। সেইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’ বলেন তিনি।

এসব বক্তব্যের জন্য ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের তীব্র বাক্যবাণ তারেককে লক্ষ্য করে। সেইসঙ্গে তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবিও উঠেছে।