সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের সামনে বন্দর রক্ষা পরিষদের পূর্ব ঘোষিত কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মহিউদ্দিন এ অভিযোগ করেন।
নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বন্দর রক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বলেন, সাইফ পাওয়ার টেক বন্দরের শত্রু, জাতীয় শত্রু। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ থাকার পরও বন্দরের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চলছে না।
“সাইফ পাওয়ার টেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সমস্যা কোথায়, তা জনগণ জানতে চায়। কিভাবে তারা টেণ্ডার ছাড়া একের পর এক টার্মিনালে বার্থ অপারেটিং এর কাজ পাচ্ছে?”
গত কয়েক দশক ধরে বন্দর নিয়ে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী মহিউদ্দিন বলেন, বন্দর একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। সাইফ পাওয়ারকে জনগণের অর্থ লুটপাটের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। তাই দায়ীদের জনগণের কাঠ গড়ায় দাঁড়াতে হবে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশ্যে মহিউদ্দিন বলেন, একটি সনদবিহীন অবৈধ সংস্থা বছরের পর বছর চট্টগ্রাম বন্দরে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রেখেছে। অথচ আপনারা তা দেখেও না দেখার ভান করছেন।
“সময় আসলে দায়ীদের কেউ পালাবার সুযোপ পাবে না।“
গত ২৭ অগাস্ট বন্দর ভবনের সামনে বন্দর রক্ষা পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশ থেকে সাইফ পাওয়ার টেককে সরাতে বন্দর চেয়ারম্যানকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয় মহিউদ্দিন।
ওই সমাবেশ থেকে কালো ব্যাজ ধারণ ও অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। পরদিন বন্দর রক্ষা পরিষদের পক্ষে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর লালদীঘিতে সমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়।
সোমবার তিন দিনের কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বন্দর শ্রমিক নেতা আবু তাহের, মাহফুজুর রহমান খান, মমতাজ উদ্দিন ও আবদুল আহাদ প্রমুখ।
এর আগে গত ২৫ অগাস্ট বন্দর রক্ষা পরিষদের সংবাদ সম্মেলন থেকে সাইফ পাওয়ার টেকের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ঘোষণা দেন মহিউদ্দিন।
চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি ও এনসিটি (আংশিক) জেটি পরিচালানাকারী বেসরকারি বার্থ অপারেটিং প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ার টেক।
মহিউদ্দিনের অভিযোগ, বন্দরের নিজস্ব তহবিল থেকে সাতশ কোটি টাকা খরচে নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পুরোদমে চালু না হলেও সাইফ পাওয়ার টেক কোনো রকম প্রতিযোগিতা ছাড়াই ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথড (ডিপিএম) ভিত্তিতে এনসিটি (আংশিক) পরিচালনার কাজ বাগিয়ে নেয়।
সাইফ পাওয়ার টেক ছিল বন্দরের গ্যান্ট্রি ক্রেন অপারেটর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। বন্দরের মূল কাজ স্টিভিডোরিং ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের পূর্ব অভিজ্ঞতা এ প্রতিষ্ঠানের নেই। অথচ এদেরই সিসিটি এবং এনসিটিকে সিসিটির বর্ধিতাংশ ঘোষণা করে (যা বেআইনী) বার্থ অপারেটিং এর দায়িত্ব দেয়া হয়।
‘অবৈধভাবে’ সিসিটি ও এনসিটি (আংশিক) পরিচালনার দায়িত্ব দেয়ায় বিল পরিশোধে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে আইনি জটিলতায় পড়তে হয়।
পরে ডিপিএম ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠিয়ে তা অনুমোদন পায়নি বলেও দাবি করেন মহিউদ্দিন।
সাইফ পাওয়ার টেকের বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ হলো- সিসিটি পরিচালনায় গত বছরের ৩১ মার্চ করা চুক্তিতে নতুন যন্ত্রপাতি কেনার বিধান থাকলেও তা করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
মহিউদ্দিনের দাবি ঢাকা আইসিডিতে সাইফ পাওয়ারটেককে অবৈধভাবে কন্টেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। দুদক বিষয়টি তদন্ত করে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে।