সংবিধান সংশোধন ‘এই অধিবেশনেই’

বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদকে ফিরিয়ে দিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী সংসদের চলতি অধিবেশনেই হওয়ার জোরাল ইঙ্গিত মিলেছে।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Sept 2014, 02:44 PM
Updated : 2 Sept 2014, 04:24 AM

দশম সংসদের তৃতীয় অধিবেশন শুরুর দিন সোমবার কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠকের পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “বিল আসলে পাস হবে।”

গত ১৮ অগাস্ট সংবিধান সংশোধনের এই প্রস্তাব মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, এই অধিবেশনে বিলটি উত্থাপিত হবে।

সংসদের এই অধিবেশন আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ কার্যদিবস সংসদ অধিবেশন বসবে।

নতুন করে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবের বিরোধিতা করে দশম সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি বলেছে, একদলীয় শাসন পোক্ত করতে আওয়ামী লীগ এই উদ্যোগ নিয়েছে।

অন্যদিকে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিলটি তোলা হলে তারা এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।

১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় উচ্চ আদালতের বিচারকদের পদের মেয়াদ নির্ধারণ ও তাদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ছিল।

১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনের মাধ্যমে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত হয়।

চতুর্থ সংশোধন বাতিল হলে জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকারের আমলে এক সামরিক আদেশে বিচারপতিদের অভিশংসনের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়।

২০১১ সালে সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর সময়ে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদে হাতে ফিরিয়ে দেয়া নিয়ে আলোচনা ওঠে। যদিও তখন সেটি করা হয়নি।

পরে ২০১২ সালে তৎকালীন স্পিকার ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের একটি রুলিংকে কেন্দ্র করে কয়েকজন সংসদ সদস্য হাই কোর্টের একজন বিচারপতিকে অপসারণের দাবি তোলেন।

ওই সময়ই বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনার দাবি জোরাল হয়।

প্রস্তাবিত এই সংশোধনীতে বিচারপতিদের অপসারণ সংক্রান্ত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের বিধান বাতিল করা হয়েছে। পরিবর্তে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের গত সরকার আমলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সময় একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

এবার সেই রকম কোনো কমিটি গঠন করা হবে কি না- জানতে চাইলে শিরীন শারমিন বলেন, “আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতেই আলোচনা হবে।”