পিনাক উদ্ধারে ব্যর্থতা প্রাকৃতিক: মন্ত্রী

মুন্সিগঞ্জের পদ্মায় ডুবে যাওয়া লঞ্চ পিনাক-৬ উদ্ধারে ব্যর্থতার জন্য প্রকৃতিকে দায়ী করেছেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Sept 2014, 01:15 PM
Updated : 1 Sept 2014, 02:01 PM

সোমবার সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ সেলিনা জাহান লিটা মন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই যুগে ডুবে যাওয়া লঞ্চ উদ্ধারের ব্যর্থতা প্রশাসনিক না কি প্রযুক্তিগত?

জবাবে নৌমন্ত্রী বলেন, “পিনাক-৬ লঞ্চের উদ্ধার কার্যক্রমে ব্যর্থতা প্রশাসনিক বা প্রযুক্তিগত নয়; বরং প্রাকৃতিক।”

দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি থেকে মাওয়া ঘাটে আসার পথে গত ৪ অগাস্ট ডুবে যায় লঞ্চ এমএল পিনাক-৬।

আট দিন পরেও নদীর তলদেশে নৌযানটির অবস্থান সনাক্ত করতে না পারায় ১১ অগাস্ট উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে স্থানীয় প্রশাসন।

লঞ্চডুবির ওই ঘটনায় ৪৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। সরকারি হিসাবে নিখোঁজ থাকে অন্তত ৬১ জন।

ফাইল ছবি

নৌমন্ত্রী বলেন, “মূলত বিস্তৃত উত্তাল নদী, প্রবল স্রোত ও ঘূর্ণাবর্ত, প্রবল স্রোতের সাথে পলি পরিবাহিত হওয়া এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ডুবে যাওয়া লঞ্চটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।”

শাজাহান খানের ভাষায়, ‘চরম বিরূপ’ আবহাওয়ার মধ্যে দুর্ঘটনাস্থলে অবস্থান করাই উদ্ধারকারীদের সামনে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল।

পদ্মা থেকে পলি অপসারণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে কি না- লিটার এই সম্পূরক প্রশ্নে নৌমন্ত্রী বলেন, প্রবল স্রোতের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। পরে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

পিনাক-৬ উদ্ধারে নেয়া পদক্ষেপগুলো সংসদে তুলে ধরেন নৌমন্ত্রী। তিনি বলেন, উদ্ধারকর্মীরা নদীর তলদেশে একটি ‘ধাতব বস্তু’ সনাক্ত করতে পারলেও তীব্র স্রোত আর গভীরতার কারণে তা উদ্ধার করা যায়নি।

৩৮ বছরে নিহত ৩ হাজার ৬৮৩

বাংলাদেশে গত ৩৮ বছরে বিভিন্ন লঞ্চ দুর্ঘটনায় তিন হাজার ৬৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান নৌমন্ত্রী।

পাবনা-১ আসনের সাংসদ শামসুল হক টুকুর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লঞ্চ দুর্ঘটনায় ১৯৮৬ সালে ৪২৭ জন, ২০০০ সালে ৩৩৮ জন, ২০০২ সালে ২৫২ জন, ২০০৩ সালে ৪৬৩ জন, ২০০৫ সালে ৩০১ জন নিহত হন।

এছাড়া ২০০৮ সালে ১১৯ জন, ২০০৯ সালে ২২৬ জন, ২০১২ সালে ১৫৪ জন এবং চলতি বছর এ পর্যন্ত ১২১ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

ইসরাফিল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে শাজাহান খান বলেন, ১৯৭৬ সালে সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার পর থেকে নৌপথে ৫৫৮টি দুর্ঘটনার তথ্য সরকারের কাছে রয়েছে। এসব দুর্ঘটনার পর ৪৫০ জনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, লঞ্চমালিকদের দায়িত্বহীন আচরণ, যাত্রীদের অসচেতনতা ও নকশা বহির্ভূত কাঠামো নির্মাণের বিষয়গুলোকে নৌ দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে তুলে ধরেন মন্ত্রী।

এম এ হান্নানের আরেক প্রশ্নের জবাবে নৌমন্ত্রী জানান, মাস্টার বা চালকদের ভুল সিদ্ধান্ত, অদক্ষতা ও অসচেতনতা, বিরূপ আবহাওয়া বা কালবৈশাখী ঝড়কে গুরুত্ব না দেয়াও নৌ দুর্ঘটনার কারণ।

কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ সোহরাব উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে নৌমন্ত্রী সংসদকে জানান, বাংলাদেশে বর্তমানে মোট চারটি উদ্ধারকারী জলযান রয়েছে।