ভাঙনে আবার বন্ধ রো রো ফেরি

মাওয়ায় পদ্মার ভাঙনে আবারও রো রো ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Sept 2014, 12:01 PM
Updated : 1 Sept 2014, 02:37 PM

মাওয়া বিআইডব্লিউটিসির ম্যানেজার সিরাজুল হক জানান, সোমবার বিকাল পৌনে ৪টা থেকে বন্ধ হয়ে গেছে মাওয়া ৩ নম্বর নতুন রো রো ফেরি ঘাট।

ভাঙনের কারণে ঘাট ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ২৮টি যানসহ রো রো ফেরি  বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ভিড়তে পারেনি। তাই আবার কাওয়ড়াকান্দি ফেরত পাঠানো হয়েছে।

তাই আপাতত যানবাহনগুলোকে মাওয়া-কাওড়াকান্দির পরিবর্তে বিকল্প পথে চলাচলের অনুরোধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি।

গত ১৯ অগাস্ট ভাঙনে বিলীন হয়ে যাওয়ার পর মাত্র পাঁচদিন আগে ৩ নম্বর রো রো ফেরিঘাট নতুন করে স্থাপন করা হয়।

তীব্র স্রোত ও ভাঙনের কারণে বিকাল থেকে কম ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন নয়টি ফেরি দিয়ে সীমিত আকারে মাওয়া-কাওড়াকান্দি চালু রাখা হলেও রাতে চলাচল করছে মাত্র তিনটি।

সিরাজুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নতুন এই রো রো ফেরিঘাটের পন্টুন এবং র‌্যাম ভাঙনের কবলে পড়ে যাতে ভেসে যেতে না পারে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। দুপাড়ে সাড়ে তিনশ’ যান আটকা পড়েছে। ক্রমেই অপেক্ষারত যানবাহনের লাইন দীর্ঘ হচ্ছে।”

তিনি জানান, দুইটি ঘাট দিয়ে কম ধারণক্ষমতার ৯টি ফেরি দিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলচল করলেও তীব্র স্রোতের কারণে রাতে ডাম্প ফেরি বন্ধ রাখ হয়।

“তাই সন্ধ্যা ৭টা থেকে মাত্র তিনটি কে-টাই ফেরি দিয়ে মাওয়া-কাওড়াকান্দি সার্ভিস চালু রাখা হয়েছে।”

এ অবস্থায় যানবাহনগুলো মাওয়া-কাওড়াকান্দির পরিবর্তে বিকল্প পথে চলাচল করলে যানজট কিছুটা কম হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ক্রমাগত ভাঙনের কারণে ৩নং ফেরি ঘাটটি সরিয়ে নেয়ার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই আগের স্থানেই একটু পাশে পন্টুনটি সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে।

এটি সরিয়ে নেয়ার জন্য মাওয়া ঘাটে থাকা উদ্ধারকারী জাহাজ ‘রুস্তম’-এর সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খালেকুজ্জামান ঘটনাস্থল থেকে সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় জানান, ঘাটটি সচল করতে বিআইডব্লিউটিএ কাজ শুরু করেছে। তবে ঘাটের ভাঙন অব্যাহত থাকায় কখন আবার রো রো ফেরি সচল করা যাবে তার নিশ্চত করা যাচ্ছে না।

এদিকে বেলা দেড়টার দিকে মাওয়া লঞ্চঘাটের ৫০ ফুট এলাকা সাতটি দোকানসহ আকস্মিক পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। এর ফলে একটি অংশ দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে লঞ্চ যাওয়া আসা করছে। হুমকির মুখে পড়েছে স্পিড বোট ঘাটসহ গোটা মাওয়া ফেরিঘাট।

প্রত্যক্ষদর্শী শহিদ আমম্মেদ বলেন, “লঞ্চঘাট এলাকায় কুদ্দুস ঢালী, বোরহান, আলম, ইসমাইল ও আলমগীরের চায়ের দোকান, রঘুনাথের সেলুন ও হাসেমের মুদি দোকান নদীতে ভেঙে গেছে। প্রায় ৪ লাখ টাকার মালামালসহ হাসেমের মুদি দোনাটি চোখের পলকে নদীগর্ভে চলে যায়। এছাড়া ভাঙনের কবলে পড়ে সরিয়ে নিতে হয়েছে হাসেমের ও ইনদার খাবার হোটেল এবং খালেক কোম্পানির মুদি দোকান।”

গত ১৯ অগাস্ট রাত পৌনে ৯টায় আকস্মিক ৩ নম্বর রো রো ফেরি ঘাটটি পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। এতে মাওয়া-কাওড়াকান্দি পুরো ফেরি সার্ভিস অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়। ৪৬ ঘণ্টা পরে রো রো ফেরিঘাট ২ নম্বর ঘাটে স্থানান্তর করে সার্ভিস সচল রাখা হয়। কিন্তু ২ নম্বর ঘাটের সাধারণ ফেরির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

পরে বিলীন হওয়া ঘাটের প্রায় ১২০ গজ দূরে স্পিড বোট ঘাটের পাশে নতুন এই ৩ নম্বর ঘাট সাধারণ ফেরির জন্য স্থাপন করা হয়। পরে ২৮ অগাস্ট এই ঘাটে রো রো ফেরির পন্টুন স্থানান্তর করা হয়। এছাড়া ১৯ অগাস্ট থেকে টানা ১৪ দিন ধরে মাওয়ায় ফেরি সার্ভিস বিঘিœত হচ্ছে ভাঙন ও তীব্র স্রোতের কারণে।