ছাত্রীদের হয়রানি, দুই শিক্ষককে বদলি

গোপালগঞ্জ শহরের বীণাপানি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের যৌন হয়রানিসহ নানাভাবে নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তের পর দুই শিক্ষককে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 August 2014, 11:15 AM
Updated : 29 August 2014, 12:02 PM

তবে ছাত্রীদের মারধর করা, প্রাইভেট না পড়লে ভয়ভীতি দেখানোর বিষয়গুলো প্রমাণিত হলেও যৌন হয়রানির কোনো প্রমাণ তদন্তে মেলেনি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

বুধবার বিষয়টির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেশমা আক্তার।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরিচালক এ কে এম মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাদের বদলির কথা জানানো হয়।

শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাসকে শরীয়তপুর জেলা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও আজাহারুল ইসলামকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ শহীদ স্মৃতি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েছে।

বীণাপানি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমরান হোসেন বলেন, “এ আদেশ সম্বলিত একটি চিঠি বৃহস্পতিবার দুপুরে হাতে পেয়েছি।”

তিনি জানান, আদেশে ওই দুই শিক্ষককে বদলির বিষয়টি জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে আজাহারুল ইসলাম রিলিজ অর্ডার নিয়ে যোগদানের জন্য চলে গেছেন।

গত সোমবার বীণাপানি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ দেন বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীর মা। 

বিষয়টি তদন্ত করেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেশমা আক্তার। তিনি মঙ্গলবার তদন্ত করেন এবং বুধবার প্রতিবেদন জমা দেন।

রেশমা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, বীণাপানি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীর মা অভিযোগ করেন, ওই দুই শিক্ষক যখন তখন মেয়েদের গায়ে হাত দিয়ে কথা বলেন। মোবাইল ফোনে ডাউনলোড করা নগ্ন ছবি প্রদর্শন ও যৌন উত্তেজনামূলক কথা বলে উত্তেজিত করার চেষ্টা করেন।

এর প্রতিবাদ করলে তাদের পরীক্ষায় অকৃতকার্য ও স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখান।

এছাড়া শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস বিনা কারণে তার মেয়েকে চড় থাপ্পড় ও স্কেল দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। এর আগে তার কাছে প্রাইভেট না পড়ার কারণে তার মেয়েকে ভয়ভীতি দেখান বলেও মেয়েটির মা অভিযোগ করেন।

এছাড়া স্কুলের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রী তাদের অভিযোগে জানায়, আজাহারুল ও সুভাষ স্যার তাদের গণিত ও বিজ্ঞানের কোচিং ক্লাস করান। কেউ কোচিং না করলে বিভিন্ন অজুহাতে তাদের নির্যাতন ও হয়রানি করেন। পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেবেন বলে ভয়ভীতি দেখান, গায়ে হাত দেন এবং উত্ত্যক্ত করেন।

শিক্ষা কর্মকর্তা রেশমা বলেন, “এসব অভিযোগের মধ্যে প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় ফেল করানো, স্কুল থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে দেয়ার ভয়ভীতি প্রদর্শন ও শিক্ষার্থীকে চড় মারার সত্যতা মিলেছে।”

এ ব্যাপারে রিপোর্ট দায়ের করার পর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরিচালক এ কে এম মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাদের শাস্তিমূলক বদলি করা হয়।