বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত, দুর্ভোগ চরমে

দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে কুড়িগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা পানির নিচে রয়েছে। প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম।

আহসান হাবীব নীলু কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 August 2014, 10:43 AM
Updated : 29 August 2014, 12:38 PM

পানিবন্দি কয়েকলাখ মানুষ খাবার, বাসস্থান ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছে। হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল হারানোর আশঙ্কায় হাহাকার করছে কৃষকরা।

বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য শুক্রবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক জরুরি সভা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, শুক্রবার ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বিপদ সীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তাহের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদ সীমার ৪৯ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন নতুন চর-দ্বীপচর গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে বলে জানান তিনি।

কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জয়নাল আবেদিন জিল্লুর জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৩৯ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। দুর্গত এলাকায় ৮৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক প্রতীপ কুমার মন্ডল জানান, জেলার নয় উপজেলায় প্রায় দুই লাখ কৃষকের ৩২ হাজার হেক্টর সবজি ও ফসলি জমি এখন বন্যার পানির নীচে।

পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

জেলা ত্রাণ বিভাগের কর্মকর্তা ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, নতুন করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ৫৬টি ইউনিয়নের ৪১৬ দশমিক ৪৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার হাজার পরিবার।

কাঁচা রাস্তা ৮৮ দশমিক ৫০ কিলোমিটার, পাকা রাস্তা এক কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ২৩ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বন্যার্তদের জন্য এখন পর্যন্ত আটশ মেট্রিকটন চাল ও ১১ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান।

মিজানুর রহমান আরো জানান, বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য শুক্রবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় স্বাস্থ্য বিভাগ, জনস্বাস্থ্য বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পশু সম্পদ বিভাগকে সর্ববোচ্চ শর্তকাবস্থায় থাকার নির্দেশ দেয়া হয়।

এছাড়া উপজেলা পর্যায়ের সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ছুটিতে না যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এলাকায় থাকতে বলা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণ কার্যক্রমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয়ের নির্দেশ দেয়া হয়।

প্রবল বর্ষণ ও উজানের ঢলে এ মাসের ১২ তারিখ থেকে উত্তরের এ জেলায় বন্যা দেখা দেয়।