বন্যা: উত্তর-পশ্চিমে আরো অবনতির শঙ্কা

উজানে পানি বাড়তে থাকায় দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2014, 12:43 PM
Updated : 27 August 2014, 05:27 PM

আগামী তিন দিনে রাজধানী ঘিরে থাকা নদ-নদীগুলোর পানিও কিছুটা বাড়তে পারে, তবে তাতে নগরীতে বন্যার আশঙ্কা দেখছেন না পূর্বাভাস কেন্দ্রের কর্মকর্তারা।

গত সোমবার রাজধানীর মাদারটেকের শেখের জায়গা এলাকায় সংযোগ সড়কের একটি অংশ ভেঙে পাশের বালু নদীর পানি ঢুকে ওই এলাকা প্লাবিত হয়।  

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পূর্বাভাস কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী রিপন কর্মকার বলেন, বালু নদীর পানির বিপদ সীমার নিচেই ছিল। কিন্তু সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় ওই ঘটনা ঘটে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, রাজধানী সংলগ্ন বুড়িগঙ্গার পানি মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার, বালু নদীর পানি ২ সেন্টিমিটার, তুরাগের পানি ৬ সেন্টিমিটার ও টঙ্গী খালের পানি ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে চার ক্ষেত্রেই পানি এখনো বিপদ সীমার নিচে রয়েছে।

বুধবার বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বুলেটিনে বলা হয়েছে, পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় বুড়িগঙ্গা, বালু, তুরাগ ও টঙ্গী খালের পানির সমতল আরো কিছুটা বাড়লেও বিপদসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হতে পারে।

রিপন কর্মকার বলেন, “পানি বাড়ার এ হার খুব ধীর বলে তা রাজধানীতে কোনো প্রভাব ফেলবে বলে মনে হয় না।”

ইতোমধ্যে ঢাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

“আশপাশের নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। তবে এ নিয়ে আশঙ্কার কিছু নেই। পানি বৃদ্ধি এক সপ্তাহ অব্যাহত থাকলে তখন ঢাকায় বন্যার আশঙ্কা তৈরি হবে।”

তবে আগামী ৭২ ঘণ্টায় লারমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, টাঙ্গাইল, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরো কিছুটা অবনতি হতে পারে বলে সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকালে দেশের ২০টি পয়েন্টে ১৩টি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছিল। এর মধ্যে দশটি পয়েন্টে পানি বেড়েছে, আটটি পয়েন্টে কমতে শুরু করেছে এবং দুটি পয়েন্টে পানি সমতল অপরিবর্তিত রয়েছে। 

পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, আগামী ৭২ ঘণ্টায় গঙ্গা অববাহিকার নদ-নদীগুলোর পানি কিছুটা কমতে পারে, ৪৮ ঘণ্টা পর সুরমা-কুশিয়ারার পানিও কমা শুরু করতে পারে। সেক্ষেত্রে নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে।

তবে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও পদ্মা এবং ঢাকা শহর সংলগ্ন নদ-নদীগুলোর পানি আগামী ৭২ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেতে পারে।

রিপন কর্মকার জানান, “গত কয়েকদিন ধরে দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু সোমবার থেকে আবার পানি বাড়ছে। উজানে ভারতে বৃষ্টি বাড়ায় দেশের নদ-নদীতে এর প্রভাব পড়ছে।

“সোমবার সন্ধ্যা থেকে পানি আবার কমার পূর্বাভাস থাকলেও আগামী ৭২ ঘণ্টায় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু এলাকার পানি সামান্য বেড়ে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পরে।”

ময়মনসিংহ, সুনামগঞ্জ, দূর্গাপুর, জামালপুর ও পঞ্চগড়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ মিলিমিটার থেকে ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও রংপুর বিভাগে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে।