ওই আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের অবকাশকালীন বেঞ্চ মঙ্গলবার সেটি ‘উপস্থাপিত হয়নি’ মর্মে খারিজ করে দেয়।
আদালতে রিটকারীর পক্ষে ছিলেন মো. এখলাস উদ্দিন ভূঁইয়া। আর কেবল টিভি নেটওয়ার্কের পক্ষে ছিলেন আব্দুল মতিন খসরু। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার শুনানি করেন।
“আমি বলেছি, অনুমতি থাকলেও দেশীয় সংস্কৃতির প্রতি হুমকি বিবেচনায় আদালত এসব টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দিতে পারে।
“শুনানি শেষে আদালত রিটটি সরাসরি খারিজ করতে চাইলে আমি উপস্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজের আবেদন করি। আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।”
এর ফলে অন্য কোনো বেঞ্চে আবার এই আবেদন করা যাবে বলে জানান এখলাস।
বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধে উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে গত ৭ অগাস্ট এই রিট করেন শাহিন আরা লাইলী নামের একজন।
গত ২১ অগাস্ট প্রাথমিক শুনানি শুরুর পর ভারতীয় চ্যানেলের অনুমতির তথ্য চায় আদালত। সেই তথ্যই মঙ্গলবার আদালতে হাজির করেন আইনজীবীরা।
বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না- তা জানতে রুল চেয়েছিলেন ওই রিটকারী।
পাশাপাশি বাংলাদেশে স্টার জলসা, জি বাংলা ও স্টার প্লাস এর সম্প্রচার সাত দিনের মধ্যে বন্ধেরও নির্দেশনা চেয়েছিলেন তিনি।
এই রিট আবেদন করার আগে বাংলাদেশে সব ধরনের ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল দেখানো বন্ধ করতে গত ৩ অগাস্ট সরকারকে উকিল নোটিস দেন বাদীর আইনজীবী। তথ্য মন্ত্রী, তথ্য সচিব ও বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে ওই নোটিসের অনুলিপি পাঠানো হয়।
রিটে বলা হয়, ভারতীয় বিভিন্ন চ্যানেল বাংলাদেশে দেখানো হলেও ভারতে বাংলাদেশের কোনো চ্যানেল দেখানো হয় না। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ভারতীয় চ্যানেলের ‘অবাধ সম্প্রচারের’ কারণে দেশের টিভি চ্যানেলগুলো দর্শক হারাচ্ছে।
‘দেশ হারাচ্ছে নিজস্ব সংস্কৃতি। এতে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীদের মধ্যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সর্বশেষ ভারতীয় চ্যানেলে প্রচারিত একটি সিরিয়ালের একটি চরিত্রের পোশাকের জন্য দুইজনের প্রাণও গেছে।’
‘পাখির প্রেমে প্রাণ বিসর্জন’ শিরোনামে দৈনিক আমাদের সময়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করা হয় রিটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল স্টার জলসার ‘বোঝে না সে বোঝে না’ সিরিয়ালের ‘পাখি’ চরিত্রের অভিনেত্রীর নামে বাজারে ছাড়া পোশাক এবার ঈদে জমজমাট ব্যবসা করে।
“নতুন স্ত্রীর বায়না অনুযায়ী ‘দামী’ এই পোশাক কিনে দিতে না পারায় বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের নন্দতেঘরী গ্রামের শাহীন নামে এক যুবক আত্মহত্যা করে। এছাড়া গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে নূরজাহান নামে দ্বিতীয় শ্রেণির এক স্কুলশিক্ষার্থীও একই পোশাক না পেয়ে আত্মহত্যা করে।”