যৌথ প্রশিক্ষণের প্রস্তাব বিএসএফের

সীমান্ত সম্মেলনে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীদের যৌথ প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছে বিএসএফ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2014, 11:45 AM
Updated : 26 August 2014, 01:54 PM

নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে এই প্রস্তাব পেয়ে তা আরো সুনির্দিষ্ট করতে বিএসএফকে বলা হয়েছে বলে বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ জানিয়েছেন।

গত ২০ থেকে ২৫ অগাস্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মহাপরিচালক পর্যায়ের এই সম্মেলন থেকে ফিরে মঙ্গলবার পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর প্রধান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ফিরছেন তারা। সেই সঙ্গে ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতিও পেয়েছেন তারা।

বর্তমানে বিজিবির কর্মকর্তারা বিএসএফের বিভিন্ন একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছেন। এর বাইরে যৌথ প্রশিক্ষণের একটি প্রস্তাব দিয়েছে বিএসএফ।

মেজর জেনারেল আজিজ বলেন, “আমরা তাদের বলেছি- কী ধরনের এবং কিভাবে এই যৌথ প্রশিক্ষণ করা যায়, তার একটি কনক্রিট প্রস্তাব দিতে।”

বিজিবি মহাপরিচালক জানান, গত বছর সচিব পর্যায়ের একটি বৈঠকের সিদ্ধান্তে এই বছরের এপ্রিলে ১০ জন কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ নিতে বিএসএফ একাডেমিতে গেছেন। ডিসেম্বরের আগে আরো কর্মকর্তা যাবেন।

বোমা নিষ্ক্রিয় করা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, প্রশিক্ষিত কুকুর সামলানোর প্রশিক্ষণ বিএসএফ একাডেমিতে নিচ্ছেন বিজিবি কর্মকর্তারা।

এর বাইরেই যৌথ প্রশিক্ষণের প্রস্তাব এসেছে জানিয়ে মেজর জেনারেল আজিজ বলেন, নতুন প্রস্তাবের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়ার কোনো মিল নেই।

ফেলানী হত্যার মামলাটি পুনঃতদন্ত করা হচ্ছে বলে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ বিজিবিকে জানিয়েছে।

“সম্মেলন শুরুর এক সপ্তাহ আগে তারা (বিএসএফ) একটি চিঠি পাঠায় আমাদের দপ্তরে। যেখানে ফেলানীর বাবা ও মামাকে পুনঃতদন্তে সহযোগিতার জন্য পাঠানো যায় কি না, জানতে চাওয়া হয়েছে,” বলেন বিজিবি প্রধান।

এই বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে সহযোগিতার কথা বিএসএফকে জানানো হয়েছে।

সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূন্যে আনার প্রতিশ্রুতি বিএসএফ দিয়েছে জানিয়ে বিজিবি প্রধান বলেন, উভয় দেশের সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা যাতে আইন মেনে চলেন, তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে উভয় পক্ষ।

সীমান্তে চোরাচালান ও মাদক পাচারের কারণেই মূলত হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে উভয় পক্ষের আলোচনায় উঠে এসেছে।

বিজিবি প্রধান বলেন, “রাতের বেলায় নিরপরাধ বা নিরীহ মানুষ বর্ডার এলাকায় যাবে কেন? জমি সংক্রান্ত ও গরুর কারণে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকে।

“ক্রাইম ইজ দি কজ অব ক্রসিং... তাই সীমান্তে অপরাধ কমাতে পারলে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা এবং সীমান্ত হত্যাকাণ্ড অনেকাংশে কমে যাবে।”

সীমান্তে রাতের বেলায় টহল জোরদারের বিষয়ে আলোচনা হয় বলে তিনি জানান।

ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ৭১টি ঘাঁটি বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে দাবি করে বিএসএফ তার একটি তালিকা দিয়েছে।  

বিজিবি প্রধান বলেন, “বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটির বিষয়ে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, এই দেশের ভূমি কোনো দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে দেয়া হবে না।”

ঘাঁটির বিষয়ে তিনি বলেন, এর আগেও বিএসএফ এমন তালিকা দিয়েছিল, কিন্তু অনুসন্ধান চালিয়ে বিজিবি কিছু পায়নি।

সীমান্ত চোরাচালানের রুটগুলো চিহ্নিত করে তা ঠেকাতে দুই পক্ষের মতৈক্য হয়েছে।

সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবির ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মেজর জেনারেল আজিজ। বিএসএফের নেতৃত্ব দেন বাহিনীর মহাপরিচালক দেবেন্দ্র কুমার পাঠক।