মাওয়া-কাওড়াকান্দি ঘাটে যানজট কাটেনি 

পদ্মার তীব্র স্রোত ও ফেরি স্বল্পতার কারণে মাওয়া-কাওড়াকান্দি ঘাটে যানজটের অবসান হয়নি। শনিবারও দুপাড়ে প্রায় ছয়শ যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় থাকে।

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 August 2014, 05:28 PM
Updated : 23 August 2014, 05:28 PM

এই ফেরি রুটে ১৬টি ফেরির মধ্যে চলছে ১১টি। এছাড়া প্রবল স্রোত ও ঘাটের সমস্যার কারণে চালুগুলোও ঠিকমতো চলতে পারছে না।

তীব্র এ যানজটে চরম ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী। ৬/৭ দিন ধরে ঘাটে আটকা পড়েছে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলাগুলোর শত শত পণ্যবাহী ট্রাক।

ফাইল ছবি

এদিকে, মাওয়া স্পিডবোট ঘাটের কাছে নতুন ৩নং ফেরিঘাটের কাজ শুরু হয়েছে। এটি সচল হতে আরো দুদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লউটিএ এর চেয়ারম্যান শামসুজ্জোহা খন্দকার।

শামসুজ্জোহা জানান, তীব্র স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে পারছে না ফেরি ঢাকা ও কর্ণফুলী। আর টাগবোর্ড দুর্বল হওয়ায় রামশ্রী, রানীগঞ্জ ও থোবালও বসে আছে।

এছাড়া যে ১১টি ফেরি চলাচল করছে তাও ঘাটের অভাবে মাওয়ায় লোড আনলোড করতে বেশকিছু সময় অপক্ষো করতে হচ্ছে। স্রোতের কারণে কাওড়াকান্দি থেকে ফেরিগুলোর মাওয়া পৌঁছতে দুই থেকে তিনগুন বেশি সময় লাগছে। স্রোতের মধ্যে ঝুঁকি নিয়েই লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল করছে।

এ কারণে অনেকে বাস ছেড়ে দিয়ে নদী পার হয়ে আবার বাসে উঠছেন।

শামসুজ্জোহা আরো জানান, দিনের বেলায় ১১টি ফেরি চলাচল করলেও গত দুদিন ধরে রাতে চলছে মাত্র ৬টি ফেরি। রাতের বেলায় তীব্র স্রোতে টানা ফেরি ল্যান্ডিং, টাপলু, রায়পুরা ও রাণীগঞ্জ চলতে পারছে না। মিডিয়াম ফেরি ফরিদপুরও বন্ধ রাখা হচ্ছে। দেশে প্রধান এই ফেরি সার্ভিস মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে। তাই ক্ষুদ্ধ এখন ভুক্তভোগীরা।

এদিকে, দীর্ঘ সময় ধরে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে আটকে পড়া চাকরাও বিপাকে পড়েছেন।

চট্টগ্রম থেকে খুলনা যাওয়ার পথে ইসবগুলের ভূষিসহ বিভিন্ন মসলা নিয়ে সাত দিন ধরে মাওয়ায় আটকা পড়া ট্রাকের চালক আকরাম হোসেন জানান, সঙ্গে থাকা সব টাকাই খরচ হয়ে গেছে। থাকা খাওয়া কঠিন অবস্থা। বিকাশে টাকা এনে চলছেন এখন। 

মাওয়া বিআইডব্লিউটিসির ম্যানেজার সিরাজুল হক জানান, স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন প্রায় ১৬শ’ যানবাহন পারপার করা হয়ে থাকে। কিন্তু গত ৪/৫ দিনে পাঁচ থেকে ৬শ’ যান পারাপার করা হচ্ছে। মাওয়া থেকে ফেরিগুলো দেড় থেকে দুঘণ্টায় পৌঁছলেও কাওড়াকান্দি থেকে মাওয়ায় আসার পথে উল্টো স্রোতে চার থেকে সাত ঘণ্টাও লেগে যাচ্ছে।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও চার সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে মাওয়া শনিবার সকালে ৬টায় বিপদ সীমার দুই সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

উজানের পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত ফেরি সার্ভিস স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভবনা কম বলে মনে করেন তিনি।

মঙ্গলবার রাতে আকস্মিক মাওয়া ৩নং রো রো ফেরি ঘাট পদ্মায় বিলীন হয়ে গেলে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ১১ ঘণ্টা পর বুধবার সীমিত আকারে চালু করা হয়। মাওয়ার ২নং ঘাটে রো রো ফেরিঘাট স্থানান্তর করে ৪৬ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রো রো ফেরি চালু হয়।