নজরুলের দায়িত্ব স্ত্রী সেলিনাকে দিল জনগণ

কাউন্সিলর নজরুল ইসলামকে হত্যার কারণে শূন্য পদের দায়িত্বভার তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটিকে দিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের জনগণ।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 August 2014, 12:07 PM
Updated : 23 August 2014, 02:52 PM

শনিবার অনুষ্ঠিত এই ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর সেলিনা বলেছেন, তিনি তার স্বামীর অসমাপ্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলনও চালিয়ে যাবেন।

নারায়ণগঞ্জের সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের মৃত্যুতে শূন্য ওয়ার্ডে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলেন তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি।

দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে গণনার পর সন্ধ্যায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তারিফুজ্জামান ফল ঘোষণা করেন।

তাতে দেখা যায়, স্বামীহারা এই নারী উপনির্বাচনে মোট গৃহীত ভোটের ৬৬ শতাংশ পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে বিপুল ব্যবধান রেখে বিজয়ী হয়েছেন।

সিংহ প্রতীকে সেলিনা ভোট পেয়েছেন ৫ হাজার ২৬৬টি, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইকবাল হোসেন পেয়েছেন আপেল প্রতীকে ১ হাজার ৯৫৮ ভোট। অন্য প্রার্থী মাসুম রানা পদ্ম ফুল প্রতীকে ৬৮৭ ভোট পেয়েছেন।

আওয়ামী লীগের নজরুলের স্ত্রী সেলিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইকবাল সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক।

ভোটে বিজয়ের প্রতিক্রিয়ায় সেলিনা কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, “এই বিজয় জনগণের, এই বিজয় আমার স্বামী নজরুল ইসলামের।

“আমার স্বামী সারাজীবন সাধারণ মানুষের পাশে ছিল। তাদের দুঃখ-দুর্দশায় তাদের পাশে যেভাবে ছিল, আমিও সেভাবে থাকব।”

স্বামীর অসমাপ্ত সব কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, “আমি আমার স্বামীসহ ৭ খুনের ঘটনায় আন্দোলন চালিয়ে যাব ন্যায়বিচারের জন্য।”

গত ২৭ এপ্রিল নজরুল ইসলাম ও তার চার সহযোগী এবং আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালককে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে মেলে তাদের লাশ।

নিহত নজরুল ইসলাম

স্বামীর লাশ দেখে সেলিনার আহাজারি

র‌্যাবের মাধ্যমে আরেক কাউন্সিলর নুর হোসেন কাউন্সিলর নজরুলসহ সাতজনকে হত্যা করান বলে অভিযোগ রয়েছে। র‌্যাবের তিন কর্মকর্তা গ্রেপ্তার রয়েছেন। নুর হোসেন পালিয়ে যাওয়ার পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

নজরুলের মৃত্যুর পর গত ১৪ জুলাই এ ওয়ার্ডের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।

২ নম্বর ওয়ার্ডের মোট ১৬ হাজার ৭২৯ ভোটারের মধ্যে উপনির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ৭ হাজার ৯৫৬ জন। ভোটের হার ৪৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি, পাইনাদী, মৌচাক, নতুন মহল্লা, আব্দুল আলী পুল, হীরাঝিল, মুজিববাগ, মিতালী মার্কেট এলাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের দুই নম্বর ওয়ার্ড গঠিত।

আটটি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলে। ভোটের সময় কোনো ধরনের গোলযোগের খবর পাওয়া যায়নি।

বিপুল সংখ্যক বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের উপস্থিতিতে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে শেষ হয় বলে জানান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তারিফুজ্জামান।