তোবার বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবি

তোবা গ্রুপের বন্ধ কারখানাগুলো অবিলম্বে খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2014, 12:06 PM
Updated : 22 August 2014, 12:07 PM

শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের ‘বেতন আটকে’ কৌশলে কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তোবা গ্রুপের মালিক দেলোয়ার হোসেন কারখানা বন্ধ করে দিয়ে কার্যত তাদের নিয়ে ‘খেলছেন’।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ান কেন্দ্র আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে শ্রমিকরা এ কথা বলেন।

তোবার শ্রমিক রেহানা পারভীন কারখানা মালিকের সমালোচনা করে বলেন, “বেতন-বোনাস না দিয়ে কৌশল করে জেল থেকে বের হয়েছেন তিনি (দেলোয়ার)। বেতন-বোনাস না দিলে শ্রমিকরা আন্দোলন করবে আর আন্দোলনের চাপে তিনি জেল থেকে বের হতে পারবেন- এটাই ছিল তার কৌশল।

‘শ্রমিকদের নিয়ে খেলা’ বন্ধ করে অবিলম্বে বন্ধ কারখানাগুলো খুলে দেয়ার দাবি জানান তিনি।

শ্রমিক নেতা এমএম শাহিন বলেন, তোবা গ্রুপের কারখানা তাজরীন ফ্যাশনসের ১২৪ জন শ্রমিককে ‘পুড়িয়ে মারার অপরাধে’ কারখানা মালিক দেলোয়ারের ফাঁসি হওয়া উচিৎ।

“শ্রমিকরা এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়। আমাদের পুড়িয়ে মারবেন, অথচ আপনাদের সাজা হবে না- তা কি করে হয়?”

তিন মাসের বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে রোজার ঈদের আগের দিন থেকে অনশন চালিয়ে আসা তোবা গ্রুপ সংগ্রাম কমিটির সদস্যদের গত ৭ অগাস্ট কারখানা থেকে পিটিয়ে বের করে দেয় পুলিশ। এরই মধ্যে বিজিএমইএর মধ্যস্থতায় শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা হয়।

এর আগে শ্রমিকদের আন্দোলনের মধ্যেই বেতন দেয়ার অঙ্গীকার করে হাই কোর্ট থেকে জামিন পান তোবা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার, যিনি তাজরীনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় কারাগারে ছিলেন।

শ্রমিক আন্দোলনকে কারণ হিসাবে দেখিয়ে দেলোয়ার গত ১৮ অগাস্ট তোবা গ্রুপের পাঁচ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমের খবর।

বন্ধ কারখানাগুলো হলো- তোবা টেক্সটাইল, তায়েব ডিজাইন, মিতা ডিজাইন, বুকশান গার্মেন্টস ও তোবা ফ্যাশনস।

তোবা গ্রুপ সংগ্রাম কমিটির সঙ্গে আন্দোলনে থাকা শ্রমিক নেতা জলি তালুকদার বিক্ষোভ সমাবেশে বলেন, দেলোয়ার অবৈধভাবে তোবার কারখানাগুলো বন্ধ করে রেখেছেন।

বিজিএমইএর সঙ্গে মধ্যস্থতার বৈঠকে অংশ নেয়ায় নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের সমালোচনা করে জলি বলেন, “আপনি নিজের মন্ত্রণালয়ই সামলাতে পারেন না, আবার এদিকে (পোশাক খাত) আসেন।”

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনজুরুল আহসান খান বলেন, “পৃথিবীর কোন দেশে পাওনা বেতনের জন্য আন্দোলন হয় না। অন্য দেশে বেতন বাড়ানো জন্য আন্দোলন হয়। অথচ আমাদের দেশ কি দুর্ভাগা! পাওনা বেতনের জন্য দিনের পর দিন আন্দোলন করতে হয় শ্রমিকদের।”

সিপিবির এই সাবেক সভাপতির ভাষায়, বর্তমান সরকার মালিকের সরকার, শ্রমিকের নয়।

শ্রমিক নেতাদের মধ্যে অনেকে ‘সরকার ও মালিকদের টাকা খেয়ে দালালি করে’ মন্তব্য করে তাদের সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান মনজুরুল আহসান খান।

একইসঙ্গে তোবা কারখানাসহ অন্যান্য বন্ধ কারখানা যত দ্রুত সম্ভব খুলে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অন্যদের মধ্যে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ান কেন্দ্রের সভাপতি মণ্টু ঘোষ, শ্রমিক নেতা কে এম রুহুল আমিন সমাবেশে বক্তব্য দেন।