আর ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনসহ ১২০ উপজেলায় তথ্য সংগ্রহ শুরু হবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে।
নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানিয়ে বলেন, তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি যাবেন। এ সময় নির্ধারিত ফরমে তথ্য হালনাগাদ করা হবে। পরে তাদের ছবি তোলার জন্য সময় জানিয়ে দেয়া হবে।
১০ দিন ধরে ভোটারযোগ্যদের তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি ভোটার স্থানান্তর, মৃতদের নাম কর্তন ও সংশোধন করা যাবে।
এর আগে সারাদেশে দুই ধাপে চার শতাধিক উপজেলায় হালনাগাদের কাজ শেষ হয়।
ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুই ভাগে হালনাগাদের জন্য প্রচার চালানোসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় সহায়তা চেয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে নির্বাচন কমিশন। অধিকাংশ শিক্ষকই তথ্য সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত থাকছেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ডিসিসিতে ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ এবং ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ছবি তোলা হবে।
এবার মোট দুই হাজার ৬৫০ জন তথ্য সংগ্রহকারী কাজ করবেন। তাদের তত্ত্বাবধান করবেন ৫৩৬ জন সুপারভাইজার। প্রত্যেক তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজাদের ইসি থেকে পরিচয়পত্র দেয়া হবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), ইউএনও, জেলা, থানা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার এ কাজ তদারকি করবেন।
হালনাগাদের সমস্যা
ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদে চারটি সমস্যা চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।তারা বলছে, বয়স্ক ভোটারদের জন্ম নিবন্ধন সনদ পেতে সমস্যা হচ্ছে। তদারকি কাজে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূমিকা আশানুরূপ নয়। সেই সঙ্গে পুরুষ ভোটারদের তুলনায় নারী ভোটারের নিবন্ধনও অনেক কম।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, অনেক উপজেলায় অস্বাভাবিক ভোটার নিবন্ধনের তথ্য পাওয়া গেছে। অন্তত ১৮টি উপজেলায় নিবন্ধনের হার অনেক বেশি। আবার ২৮টি উপজেলায় নিবন্ধনের হার অনেক কম। মাঝপথে এসে কার্যক্রম পর্যালোচনা করে এসব অসঙ্গতি দ্রুত সমাধানের সুপারিশ করেছে ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ।
এসব সমস্যার কথা স্বীকার করে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “আমরা প্রতিনিয়ত মাঠ পর্যায়ের কাজ মনিটর করছি। কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির বৈঠক করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দিচ্ছি।”
বিদ্যমান ভোটার তালিকায় [ভোটার বৃদ্ধির হার] সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ নতুন ভোটার নিবন্ধন হতে পারে বলে ধারণা করেছে ইসি।
কমিশন সভায় জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহা পরিচালক সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন এক প্রতিবেদনে জানান, কিছু উপজেলায় নিবন্ধন হার অনেক বেশি, যা অস্বাভাবিক। এর মধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় সর্বোচ্চ ৮.১২ শতাংশ।
এছাড়া সিলেটের জৈন্তাপুর, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট, ভেদরগঞ্জ, রাঙ্গামাটির রাজস্থালী, গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া, রাঙ্গামাটির লংগদু, হবিগঞ্জের মাধবপুর, সিলেটের গোলাপগঞ্জ, খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, শরীয়তপুরের ডামুড্যা, খাগড়াছড়ির পানছড়ি, সিলেটের কানাইঘাট, ফেঞ্চুগঞ্জ, গাজীপুরের কাপাসিয়া, রাঙ্গামাটির কাউখালী ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ৬ শতাংশের ওপরে ভোটার বেড়েছে।
নিবন্ধনের হার ৪ শতাংশের নিচে রয়েছে বাগেরহাট সদর, রামপাল, মোড়েলগঞ্জ, নাটোরের গুরুদাশপুর, কিশোরগঞ্জের মিঠামইন, নেত্রকোনার খলিয়াজুড়ী, পাবনা সদর, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া, নাটোরের লালপুর, দিনাজপুর সদর, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ, রংপুরের তারাগঞ্জ, সিরাগঞ্জ সদর, ঢাকার ধামরাই, কক্সবাজারের পেকুয়া, মহেশখালী, রাজশাহীর পুঠিয়া, দুর্গাপুর, ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু, রংপুরের গঙ্গাচড়া, মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ, মানিকগঞ্জের শিবালয়, যশোরের শার্শা, বরগুনার বামনা, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও বান্দরবান সদরে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির বৈঠক শেষে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “যোগ্যদের ভোটার করতে যা যা করণীয় সব করার নির্দেশ দিয়েছি। সেই সঙ্গে ভোটার অযোগ্যদের নিবন্ধন না করার জন্য বলা হয়েছে। অসঙ্গতির বিষয়ে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের বলেছি।”
বর্তমানে ৯ কোটি ১৯ লাখের বেশি ভোটার রয়েছে। এবার হালনাগাদে ৪৬ লাখ নতুন ভোটার যুক্ত হতে পারেন বলে ইসির ধারণা।